মানবপাচার বন্ধে পদক্ষেপ জরুরী

5

দেশে এবং বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর প্রবল তরঙ্গ অব্যাহত থাকার পরও মানব পাচারকারী চক্রের দৌরাত্ম্য কমছে না কিছুতেই। এবার লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার সমুদ্র উপকূলে বিকল ও প্রায় ডুবু ডুবু অবস্থায় একটি নৌযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৬৪ বাংলাদেশীকে। এর বাইরে তিনজন ছিলেন মিসরীয়। ইতোপূর্বে গত মে থেকে চলতি জুনে চার দফায় ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৪৩ বাংলাদেশীকে। আফ্রিকার এই দেশটিতে বর্তমানে স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তত্ত্বাবধানে ৭০৭ বাংলাদেশী অবস্থান করছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও স্থানীয় রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় তারা দিনগুজরান করছেন কোনক্রমে। তাদের সবার ভাগ্য ও ভবিষ্যত একেবারে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অথচ কেউ দেশেও ফিরে আসতে চাইছেন না। উদ্ধারকৃতদের ভাষ্য অনুযায়ী বর্তমানে আরও অন্তত দেড়-দুই হাজার বাংলাদেশী লিবিয়ার উপকূলে অবস্থান করছেন। এজন্য প্রত্যেককে দালালদের হাতে তুলে দিতে হয়েছে ৮-১০ লাখ টাকা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাওয়ার জন্য ভাগ্যোন্বেষণে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ১৯০৬৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশী ইতালি পৌঁছেছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশীর সংখ্যা সর্বোচ্চ দেশ-২ হাজার ৬০৯ জন।
কিছুদিন আগে ড্যান্স-পার্টির আড়ালে তথাকথিত নৃত্যশিল্পী পাচারের এক সচিত্র প্রতিবেদন উঠে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইউএইর দুবাইয়ের নামী-দামী হোটেল থেকে। সেখানে তাদের ক্যাবারে নাচের কথা বলে নিয়ে মূলত বাধ্য করা হতো যৌনবৃত্তিতে। এই ঘটনায় সেদেশে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
এমনকি মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে অন্তত ৩৮ বাংলাদেশীর লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ঘৃণ্য চক্রের হাতে ২৬ জনের নির্মম হত্যাকান্ডটিও মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। মানব পাচারকারীরা বিপদসঙ্কুল যেসব রুট ব্যবহার করে থাকে সেখানে কারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। জীবনের সমূহ ঝুঁকিসহ পথে পথে আছে আটকানো, জিম্মিদশা, মুক্তিপণ আদায়সহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নির্যাতন ইত্যাদি।