স্টাফ রিপোর্টার :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক একেএম ফেরদৌসসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রাজস্ব খাত, উন্নয়ন খাত এবং প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিমকো ইলেক্ট্রনিক্স-এর প্রতিনিধি মো. শামসুল কবীর।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও কার্যাদেশ আমাদেরকে না দিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে প্রদান করা হয়। আমরা জানতে পেরেছি এর আগেও এ রকম বহু অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক একেএম ফেরদৌস। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেন্টার অব এক্সিলেন্স, রাজস্ব খাত, উন্নয়ন খাত এবং প্রকল্পের টেন্ডারে অনিয়ম করে চলছেন তিনি। আর তার এসব অনিয়মের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. আশরাফুল ইসলাম ও রাজস্ব খাতের টেন্ডারে অনিয়মের মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন সহকারী রেজিস্ট্রার পদমর্যাদার কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই।
শামসুল কবীর জানান, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য একটি টেন্ডার আহবান করা হয়। এতে ৩ (তিন) টি কোম্পানী দরপত্র জমা দিলে ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকায় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কার্যাদেশ পাওয়ার কথা সিমকো ইলেক্ট্রনিক্সের। কিন্তু আমাদের না দিয়ে ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৯ শত টাকা তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা স্পীড টেক-কে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৯ শত টাকা ক্ষতি হয়েছে। এরপর সিমকো’র পক্ষ থেকে কার্যাদেশ না পাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক একেএম ফেরদৌসের কাছে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি অনলাইন ব্যাখায় জানান, টেকনিক্যাল কমিটি কর্তৃক স্পেসিফিকেশন সঠিক না হওয়ার কারনে সিমকোকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়নি। এরপর সিমকো ইলেক্ট্রনিক্স ওই ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করে হোপ (ঐঙচঊ)-এর কাছে অভিযোগ করে। পরে সেখান থেকে বলা হয় ভিসি কর্তৃক তদন্ত কমিটি কোন ত্রুটি খুজে পায়নি এবং অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা। তিনি বলেন, আমাদের স্পেসিফিকেশন শতভাগ সঠিক। মূলত অনিয়মের মাধ্যমেই আমাদের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়নি।
তিনি বলেন, একেএম ফেরদৌস ভিসির এলাকার এবং ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত। ভিসির আশ্রয় প্রশ্রয়ে তিনি এসব অনিয়ম করে চলেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরও দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি ৬ মাস চুক্তি ভিত্তিক চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন। তাই ভিসিও এই অনিয়মের দায় এড়াতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক পদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সেন্টার অব এক্সিলেন্স, রাজস্ব খাত, উন্নয়ন খাত এবং প্রকল্পের টেন্ডারে অনিয়ম করে আসছেন একেএম ফেরদৌস। তদন্ত করলে এ চক্রের আরও অনিয়মের বিষয় বেরিয়ে আসবে। তাই এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।