সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত চলতি নদীর বালাকান্দা বাজার ও রামপুরের মধ্যবর্তী স্থানে কোন সেতু না থাকায় ৫০টির বেশি গ্রামের আড়াই লাখের বেশি মানুষ প্রতিদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে ৬টি খেয়াঘাট পাড়ি দিয়ে শহরে চলাচল করতে হয়। বড়রা কোনোমতে যাতায়াত করতে পারলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী ছাত্রছাত্রীদের জন্য এভাবে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। পাকা সেতুর জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও তা বরাবরই উপেক্ষিত হয়ে আসছে। নদীটি জেলার উত্তর সুরমা এলাকাকে জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। নিরাপদ যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তিনটি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিশাল জনগোষ্ঠী। এসব উপজেলার মানুষ বছরের পর বছর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় মারাত্মক যোগাযোগ বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন। বিশেষ করে ৫০ টি গ্রামের সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন স্কুল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলতি নদীর বালাকান্দা, সাহেবনগর, অরুনিশা, কাইয়ারগাঁও, ডলুরা, জিনারপুর, উড়াকান্দাসহ ৬টি স্থানে খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে যাতায়াত করেন তারা। উত্তর সুরমার বিস্তৃীর্ণ জনপদে সারা বছর সবজি চাষাবাদ করেন কৃষকরা। তবে শীতকালীন সবজি বেশি আবাদ করায় উত্তর সুরমা সবজি ভান্ডার হিসাবে খ্যাতি লাভ করছে। এখানকার উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা পুরন করে সিলেট মৌলভীবাজার, নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। কিন্তু চলতি নদীর উপর কোন সেতু না থাকায় তারা উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী পরিবহন করতে সীমাহীন কষ্ট করে থাকেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে চাষীরা সবজি উৎপাদন করলেও কাঙ্খিত লাভের মুখ দেখতে পান না।
কাইয়ারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, বিভিন্ন কাজে জেলা সদরে পৌছাতে হলে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। আমাদের এলাকাবাসীর একটাই দাবি অচিরেই আমাদেরকে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
অরুনিশা গ্রামের বাসিন্দা মতিন আলী বলেন, আমরা সারা বছর কোন না সবজি ফলিয়ে থাকি, কিন্তু এই সবজি আমাদের বাজের তেমন একটা লাভে বিক্রি করতে পারিনা। সবজি গুলো যদি শহরের নিয়ে বিক্রি করতে পারতাম তাহলে অনেক টাকা লাভ পেতাম। কিন্তু শহরের যেতে চাইলে আমাদেরকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে টাকাও বেশি লাগে আর বিড়ম্বনাও বেশি হয়। তাই আমাদের দাবি যে চলতি নদীর বালাকান্দা বাজার ও রামপুরের মধ্যবর্তী স্থানে খুব দ্রুত একটা সেতু নির্মাণ করা হোক।
সদর উপজেলা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতু নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। খুব দ্রুত এই সেতুর কাজ শুরু হবে বলে আশা করি। এ বিষয়ে এলজিইডির সুনামগঞ্জ সদর দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।