কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের তিন শতাধিক বেসরকারি অনার্স কলেজের প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষক নামমাত্র বেতনে কিংবা বিনা বেতনে চাকরি করছেন। করোনার সময় শিক্ষকদের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ায় তারা সরকারের কাছ থেকে বেতন পেতে সোচ্চার হয়েছেন। কিন্তু সরকার বেতন দেবে নাকি শর্ত মেনে কলেজগুলোর কর্তৃপক্ষ বেতন দেবে তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে।
বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজের শিক্ষকরা জানান, কমিটির মাধ্যমে তারা বেতন চান না। সরাসরি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অথবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেতনের অংশ পেতে চান তারা। কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ বা গভর্নিং বড়ির মাধ্যমে দিলে ঠিকভাবে বেতন-ভাতা পাবেন না তারা। যে কারণে অনার্স-মাস্টার্সের মান কমেছে, চালু থাকা অনার্স-মাস্টার্স কোর্স বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী কারিগরি ডিপ্লোমা বা শর্ট কোর্স চালু করলে সেটাও মানহীন হয়ে পড়বে শিক্ষকরা বেতন না পাওয়ায়।
অন্যদিকে বেসরকারি কলেজে চলমান অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষক কলেজের জনবল কাঠামোর বাইরে থাকায় বেসরকারি শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবে না। বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষকদের বেতনের নিশ্চয়তার ভাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় আন্তরিক না হলে তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তর সব কলেজে রাখা হবে না। যেসব কলেজে অনার্স-মাস্টার্স স্তর রাখা হবে না, সেসব কলেজে ডিগ্রি পর্যন্ত রেখে কারিগরি ডিপ্লোমা ও বিভিন্ন শর্ট কোর্স চালু করা হবে। শিক্ষকদের বেতনের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তর উঠিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কমিটি বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তারা যেভাবে মতামত দেবে সেটা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ শিক্ষকদের বেতনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকরা বেতন না পেলে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সে বিষয়টিতে অবশ্যই গুরুত্ব দেবো।’
অনার্স-মাস্টার্স কোর্স তুলে দেওয়া ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠন করা কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অ্যাক্টিং ভিসি অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে প্রথম একটি সভা হয়েছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ এসেছে। তবে এখনও কোন কলেজ থাকবে কোন কলেজ থাকবে না তা এখনও নিশ্চিত নয়। এসব বিষয়ে শিক্ষাবিদদের নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে বেশ কয়েকটি মিটিং করতে হবে। বিষয়টি কিছুটা সময় সাপেক্ষ।’