কাজিরবাজার ডেস্ক :
চল্লিশ বছর আগের কথা। দিনটি ছিল রবিবার। কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৫ মাইল। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়াও গতিরোধ করতে পারেনি গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষের মিছিল। সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ-শহর-নগর-বন্দর থেকে অধিকার বঞ্চিত মুক্তিপাগল জনতা ছুটে এসেছিল রাজধানী ঢাকায়। সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী লাখো কণ্ঠের শে¬াগানে প্রকম্পিত পুরো রাজধানী। একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত জনসমুদ্র।
গণসমুদ্রের প্রবল জোয়ারে ভাসিয়ে আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে ১৯৮১ সালের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এমনি একটি দিনে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থবারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে এসেছিলেন তিনি। আজ সেই ১৭ মে, বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি দিবস।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর চরম এক প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় বিদেশে থাকার কারণে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তবে বিদেশে থাকাকালেই ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে দলের নেতারা শেখ হাসিনাকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করেন। দেশে প্রত্যাবর্তনের পর নেতারা তাঁর হাতে তুলে দেন তৎকালীন বহুধাবিভক্ত দেশের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যের সাফল্যগাথা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকা।
লাখো জনতার প্রাণঢালা উষ্ণ সম্ভাষণ এবং গোটা জাতির স্নেহাশীষ ও ভালবাসার ডালা মাথায় নিয়ে প্রিয় স্বদেশভূমিতে ফিরে এসেছিলেন আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সভাপতি শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর কন্যার আগমনে সেদিন গগনবিদারী মেঘ গর্জন, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বদলা নেয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল, আর মুষলধারে বারিবর্ষণে যেন ধুয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার পিতৃহত্যার জমাটবাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন।
ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ মানুষের সংবর্ধনা ও হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা-ভালবাসার জবাবে পিতা-মাতা-ভাইসহ স্বজন হারানোর বেদনায় কাতর বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা বলেছিলেন, ‘…..আমি সামান্য মেয়ে। সক্রিয় রাজনীতির দূরে থেকে আমি ঘরসংসার করছিলাম। কিন্তু সবকিছু হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। বাংলার দুঃখী মানুষের সেবায় আমি আমার এ জীবন দান করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাঁদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’ শেখ হাসিনা সেদিন জনগণকে দেয়া সেই অঙ্গীকার পূরণে ৪০ বছর ধরে প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জনগণের ভাগ্যবদলে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামরিকতন্ত্রের বেড়াজাল থেকে দেশের জনগণকে গণতন্ত্র উপহার দিতে দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলেই ব্রাকেটবন্দী আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশের একক বৃহত্তম ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক দল। শুধু দেশের বৃহত্তম দলই নয়, এই ৪০ বছরে জনগণের আস্থা অর্জন করে প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট সংখ্যা বাড়িয়েছেন দ্বিগুণ-ত্রিগুণ হারে। শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন বলেই প্রাসাদতম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে সামরিকতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে দেশবাসীকে দিয়েছেন কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র।
শুধু তাই নয়, শক্তহাতে দলের হাল ও গণতন্ত্রের পতাকা উর্ধে তুলে রেখে দেশে ফেরার পর থেকেই গভীর ষড়যন্ত্র, বার বার প্রাণনাশের চেষ্টা, গ্রেফতার-নির্যাতনসহ শতসহগ্র বাধা অতিক্রম করে জনগণের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে দেশে ফেরার ১৫ বছরের মাথায় আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে সক্ষম হন শেখ হাসিনা। পাঁচ বছর দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করে দেশকে নিয়ে যান উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে। এরপর আবারও ষড়যন্ত্র। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরের বিভীষিকাময় নির্যাতনে নেতাকর্মীরা যখন দিশেহারা, তাঁকেসহ পুরো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতে গ্রেনেড হামলার মুখেও অবিচল থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে বন্ধুর পথ পাড়ি দেন বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা।
এরপর ওয়ান/ইলেভেন পরবর্তী সামরিক নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, দীর্ঘদিন কারাবাসে থেকেও কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করেননি শেখ হাসিনা। ওই সময় ভয়-ভীতি ও ষড়যন্ত্রে অনেক নেতা পথভ্রষ্ট হওয়ার উপক্রম হলেও জেলে থেকেও সফল দিক-নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের অটুট বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হন তিনি। শেখ হাসিনার এই অবিচল ও সাহসী নেতৃত্ব আর জনগণের প্রতি অগাধ বিশ্বাসের কারণেই ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দেশের জনগণ ইতিহাসের সর্ববৃহৎ তিন-চতুর্থাংশ আসনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনাকে।
স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের দোসরদের অন্তহীন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময়, উন্নয়নের রোলমডেল।
চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় ঘোর প্রতিপক্ষরাও অপকটে স্বীকার করছেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প এখন শেখ হাসিনাই। এজন যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেই দেশকে তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে এরই মধ্যে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও স্বীকার করেছেন, সরকারের যা কিছু সাফল্য এর সবই অর্জিত হয়েছে শেখ হাসিনার ঐকান্তিক চেষ্টা ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও অকপটে স্বীকার করে বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার অসম সাহস ও দৃঢ়চেতা মনোবলের কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায় কার্যকর এবং জঙ্গীবাদ দমন করা সম্ভব হয়েছে। একমাত্র শেখ হাসিনা নেতৃত্বে রয়েছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। দেশ বেরিয়ে এসেছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে। সবশেষ ভয়াল করোনায় যখন গোটা বিশ্ব ল-ভ-, সেই দুঃসময়েও দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে প্রবৃদ্ধি পাঁচ ভাগের ওপর নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সবকিছু মিলিয়ে দৃঢ়ভাবেই বলা যায়, সরকার পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প আজ কেউ নেই।
দেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এই চল্লিশ বছরে প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। ব্রাকেটবন্দী বহুধাবিভক্ত আওয়ামী লীগকে শুধু ঐক্যবদ্ধই নয়, শক্তহাতে হাল ধরে আওয়ামী লীগকে বিপুল জনসমর্থিত দেশের সর্ববৃহৎ একক বৃহত্তম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। বিপুল সমর্থন নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে আত্মনির্ভরশীল, সুখী-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলসভাবে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি দিবস উপলক্ষে আজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগ ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ১৬ ও ১৭ মে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটি তথ্য ও সংবাদচিত্র প্রদর্শনী। রবিবার বেলা ১১টায় ধানম-ির ৩২ নম্বরে ‘শেখ হাসিনার চার দশক : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীতে দুটি আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টায় ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং বিকেল তিনটায় গুলিস্থান মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়াও ঢাকাসহ সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির বাণী ॥ এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সুগম হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নব্বয়ের গণ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়, বিজয় হয় গণতন্ত্রের।
দিনটি উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভূলণ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দল ভাঙ্গার রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন, সর্বোপরি রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই প্রতিকূল অবস্থায় দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করে দেশকে আজ উন্নয়ন আর অগ্রগতির পথে নিয়ে এসেছেন শেখ হাসিনা।
উপদেষ্টা পরিষদের অপর সদস্য প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম বলেই ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আমরা (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিলাম। তাঁর হাতে পতাকা দিয়েছিলাম বলেই আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পেয়েছি, তাঁর হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলাম বলেই আমরা মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি, তাঁর হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলাম বলেই আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়কই নন; তিনি তাঁর সততা, যোগ্যতা ও কর্ম প্রচেষ্টায় আজ বিশ্বনেত্রী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্বে একজন অনুকরণীয় নেতৃত্বের আদর্শ।
টিভির পর্দায় ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে ঘিরে দর্শক চাহিদা মেটাতে আরও একবার টিভি পর্দায় ফিরে আসছে ডকুড্রামা ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’। সারাদেশে সিনেমা হলে এবং টেলিভিশনে দারুণ জনপ্রিয়তা পাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বেশ কিছু চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’ ডকুড্রামাটি আজ সোমবার ১৭ মে প্রচারিত হবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডসহ বেশ কিছু বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে। সিআরআই-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয় । ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে আজ ১৭ মে বিকেল সাড়ে তিনটায়। বেসরকারী বিভিন্ন চ্যানেলেও আজ সম্প্রচার করা হবে ডকুড্রামাটি।
স্টার সিনেপ্লেক্সে ১৫ নবেম্বর প্রিমিয়ার শোর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’। দর্শকদের জন্য স্টার সিনেপেক্সে, ব্লকবাস্টার সিনেমায়, মধুমিতা সিনেমা হল এবং সিলভার স্ক্রিনে প্রদর্শনী শুরু হওয়ার পর থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহে বক্স অফিসে সবচাইতে সফল ছিল ডকুড্রামাটি। দর্শক চাহিদার কথা মাথায় রেখে পরবর্তীতে সারাদেশের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের আরও ৩৫টি সিনেমা হলে প্রদর্শন করা হয় ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’ ডকুড্রামা। সব মিলিয়ে দারুণভাবে ব্যবসায়সফল এটি।
পরবর্তীতে দর্শক চাহিদার কথা বিবেচনায় এনে ডকুড্রামাটি টেলিভিশন চ্যানেলেও সম্প্রচার করা হয়। সেখানেও দর্শক জনপ্রিয়তা পায় ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজের মুখ থেকে তাঁর বিদেশ জীবন, দেশে ফিরে আসার কথা শোনা যায় এই চলচ্চিত্রে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথাও এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়, বরং ডকুড্রামার মূল উপজীব্য বিষয় ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফর্মেশন (সিআরআই)। প্রযোজক হচ্ছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও নসরুল হামিদ বিপু। পরিচালনা করেছেন এ্যাপল বক্স ফিল্মসের পিপলু খান। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কৌতূহল আছে সবার। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর কিভাবে তিনি বেঁচেছিলেন তার ইতিহাস অনেকের কাছেই অজানা। আর সে কারণেই সারাদেশে এই ডকুড্রামা সাড়া জাগিয়েছে। দেশে ও বিদেশে এখনও ডকুড্রামাটির চাহিদা রয়েছে বলে জানান এর পরিবেশক গাউসুল আজম শাওন।
ডকুড্রামায় একজন শেখ হাসিনার রান্নাঘর থেকে শুরু করে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন, বেঁচে থাকার সংগ্রামসহ ব্যক্তিগত, পারিবারিক, রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক ফুটে উঠেছে। কথাগুলো বলেন ডকুড্রামাটির পরিচালক পিপলু খান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ছোটবোন শেখ রেহানার জীবনের কথাও উঠে এসেছে এতে। ডকুড্রামার মধ্য দিয়ে একটি সত্যনিষ্ঠ জীবনপ্রবাহকে পর্দায় হাজির করতে চেয়েছি।