কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) জন্মতারিখ অনুযায়ী এক হাজার ৯৩২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়সের ন্যূনতম শর্ত পূরণ হচ্ছে না। তাই এসব মুক্তিযোদ্ধাদের এনআইডি সংশোধনের জন্য আগামী ১০ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছে সরকার।
শর্ত পূরণ না হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এনআইডি সংশোধনের পরামর্শের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিতে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকল জেলা প্রশাসক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে কিংবা এর আগে কমপক্ষে ১২ বছর ৬ মাস বা জন্ম তারিখ ১৯৫৯ সালের ৩০ মে তারিখের আগে হতে হবে বলে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) তথ্যভাণ্ডার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এক হাজার ৯৩২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্ণিত জন্মতারিখ কাক্সিক্ষত নয়, বিধায় উক্ত বয়সের ন্যূনতম শর্ত পরিপালন করে না।
এতে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরেক স্মারকে ইতোপূর্বে জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম, ঠিকানাসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বয়সের বিষয়টি গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এমআইএস তথ্যভাণ্ডার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, উল্লিখিত সংখ্যক (এক হাজার ৯৩২ জন) বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদর্শিত জন্মতারিখ সংশোধিত হয়নি। ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়সের শর্ত পরিপালন না হওয়ায় ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউনসিল আইন ২০০২’ এর ৭(ঝ) ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণ বাতিলযোগ্য এবং এ সংক্রান্ত সুবিধাদি প্রাপ্য নয় বিধায় সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন করা প্রয়োজন।
এ প্রেক্ষিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়সের শর্ত পরিপালন করা না হলে পরবর্তী সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে বিধায় আগামী ১০ মে এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের বয়স সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শ দিতে সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ করা হয় ওই চিঠিতে।
গত ২৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম ধাপে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেন। এ তালিকায় রয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম।
সব মিলিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রকৃত সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার পার হবে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) এক লাখ ৮২ হাজার ৮৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম যুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৩৫ হাজার জনের বেসামরিক গেজেটে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউনসিলের অনুমোদন না থাকায় তাদের এই তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।
ইতোমধ্যে এসব গেজেট নিয়মিতকরণের জন্য উপজেলার প্রতিবেদন আসছে। সেগুলো যচাই-বাছাই এবং আপিল শুনানি শেষে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে যাচাই-বাছাইধীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের চূড়ান্ত তালিকায় প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। তবে এর আগে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে গেজেটধারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে।