সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ন্যায় সুনামগঞ্জেও পঞ্চম দিনের মতো সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। চলাচলে কড়াকড়ি আরোপসহ নানা নিষেধাজ্ঞায় গত বুধবার ভোর থেকে সরকারের এই নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে।
রবিবার সুনামগঞ্জের ৪ পৌরশহর ও সকল উপজেলা শহরে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন গুরুপূর্ণ রাস্তায় জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। যেসব পেশার মানুষ জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে আসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ । তবে শহরের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন পালনে কড়াকড়ি করা হলেও গ্রাম পাড়ামহল্লা বা তৃণমূল পর্যায়ে অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে। অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন চলছে শহরতলীর বিভিন্ন পাড়ামহল্লা গ্রামীণ এলাকায়। জেলা ও উপজেলার আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকলেও এসব এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা, রিক্সাসহ বিভিন্ন যান চলাচল করতে দেখা গেছে। দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিভিন্ন বিধি নিষেধ থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে তা মানতে দেখা যায়নি। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতাও লক্ষ্য করা গেছে সাধারণের মাঝে।
সরেজমিনে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, ট্রাফিক পয়েন্ট, উকিলপাড়া, হোসেন বখত চত্ত্বর এলাকায় লোকসমাগম কম দেখা গেছে। এসব এলাকায় ফার্মেসী ও নিত্যপণ্যের দোকান ও খাবার হোটেল ব্যতিত সকল প্রকারে ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্বল্প সংখ্যক অটোরিকশা, সিএনজি চলাচল করতে দেখা গেলেও তা লকডাউনে তেমন প্রভাব ফেলেনি। এর বিপরীতে শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লাও গ্রামীণ এলাকায় যান চলাচলসহ হাটবাজারে ব্যবসা পরিচালনা, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা উপজেলার পাগলা বাজার, শান্তিগঞ্জ, গণিগঞ্জ বাজার, নোয়াখালি বাজারে লোক সমাগম ছিল অন্যান্য দিনের মতো। এসব এলাকায় হরহামেশেই ব্যবসা পরিচালনা করতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি ক্রেতা বিক্রেতাদের। অনেকের কাছেই মাস্ক থাকলেও তার ব্যবহার বিধি মানা হয়নি। এসব এলাকায় সর্বাত্মক লকডাউন পালনে সড়কে পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও বাজার এলাকা ছিল হতাশাজনক।
এদিকে লকডাউন কার্যকর করতে শহরের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। নির্দেশনা না মানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাসহ জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক লকডাউনের বিধি নিষেধ মানতে জেলা উপজেলা গ্রামীণ পর্যায়ে নজরদারী করা হচ্ছে । তবে বর্তমানে ধান কাটার মৌসুম চলমান থাকায় গ্রামীণ এলাকা আওতামুক্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।