কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে সরকারি বেসরকারি সব অফিস আদালত বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যেও সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর বাংলাদেশ সচিবালয়। সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে খোলা রাখতে হচ্ছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, তথ্য অধিদফতর (পিআইডি), সচিবালয় ক্লিনিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি জরুরি ইউনিট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জরুরি ইউনিট ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন, বিশেষ করে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এভাবেই কাজ চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সচিবালয় ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সীমিত পরিসরে এসব দফতর খোলা রেখে অতিপ্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চলছে। সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ বন্ধ রেখে একটি মাত্র প্রবেশপথে (১ নম্বর গেট) দায়িত্ব পালন করছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, বন্ধ থাকায় লোকজনের সমাগম একেবারেই কম। জরুরি কাজে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী আসছেন তারা তাদের নিজস্ব দফতরের পরিচয়পত্র নিয়েই আসছেন। কাজেই কোনও ঝামেলা নেই। এছাড়া সচিবালয় বন্ধ থাকলে তদবিরকারী বা দর্শনার্থীর ভিড় থাকে না। কোনও ঝামেলা না হওয়ার এটিও একটি বড় কারণ বলে জানিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। তাই কিছুটা রিল্যাক্স মুডে দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালীন জরুরি সেবা দেওয়া বিভাগগুলো কেবল খোলা রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সচিবালয় ক্লিনিক খোলা রাখা হয়েছে করোনা টিকা দেওয়াসহ সচিবালয়ের ভেতরে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন; তাদের জরুরি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য। রোস্টার অনুযায়ী চিকিৎসক ও নার্সসহ কয়েকজন স্টাফও আসছেন প্রতিদিন। সচিবালয় ক্লিনিকের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন প্রতিদিন এসে কাজের খোঁজ-খবর নেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে খোলা রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ বিভাগ। দেশের বিভিন্ন জেলায় বা বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের জরুরি ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দসহ যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে এই বিভাগ। সর্বত্রই কর্মকর্তারা আলাদা ডিউটি রোস্টার তৈরি করেছেন। সেই মোতাবেক কাজ করছেন তারা। নিজেও সারাক্ষণ প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
দিনের চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকছে তথ্য অধিদফতর (পিআইডি)। তথ্য অধিদফতরের একটা বড় অংশ সংবাদ নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ যেকোনও সিদ্ধান্ত অতিদ্রুত সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে এবং তা গণমাধ্যমের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে। যার কারণে পিআইডি খোলা রাখার কোনও বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার। চলমান করোনা মহামারিতেও আলাদা রোস্টার অনুযায়ী কর্মকর্তারা নিউজরুমে ডিউটি করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হয়েছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের একটি অংশ। সেখান থেকেই রাষ্ট্রীয় সব কাজ এবং সমগ্র দেশের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব। এ সময় সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট জনবল নিয়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি ইউনিট। রমজানে নানা সমস্যা সমাধান, অভিযোগ গ্রহণ এবং সেবা দিতে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত সেল।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু জরুরি কাজের সুবিধার্থে নির্দিষ্ট সংখ্যক জনবল দিয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি ইউনিট সবসময় খোলা রাখতে হয়। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। এছাড়া সারাদেশের জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন ও সুবিধা হয় সেভাবেই কাজ করছি। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তাও নিতে হচ্ছে।