পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
চা-শ্রমিকদের শারদীয় দুর্গোৎসবের পর সবচেয়ে বড় উৎসব হলো দুল পূর্ণিমার দুল উৎসব। তবে এটিকে বলে রঙের পরব বা ফাগুয়া বলা হয়ে থাকে।
প্রথম দিকে ২ দিন কাদা খেলা হয় চা-শ্রমিকদের মাঝে। শেষের দুই দিন লাল আবির রঙসহ নানা রং মাখামাখি করে আবার রঙ গুলে পিচকারি দিয়ে একে অন্যের গায়ে দেয়। প্রাচীনকাল থেকে এ চা-বাগানগুলোতে ফাগুয়া হিসেবে সবগুলো চা-বাগানে এ উৎসব পালন করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কানিহাটি অফিস টিলায় পঞ্চায়েত সদস্য গৌরি সংকার মৃধার সভাপতিত্বে ও রাধে শ্যাম বীনের সঞ্চালনায় ফাগুয়া উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য ও চা শ্রমিক সীতারাম বীন, সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জু ও আলমগীর হোসেন। আলোচনা সভা শেষে, কানিহাটি চা-বাগানের চা ছাত্র-যুবকরা এসে প্রধান অতিথির গায়ে আবির রঙ দিয়ে উদ্বোধন করে ফাগুয়া উৎসবের।
এরপর চা-শ্রমিক সন্তানদের অংশ গ্রহণে নিজেদের উৎসবের গান গেয়ে গেয়ে শুরু হয় কাঠি নৃত্য। এই ফাঁকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত চা শ্রমিক সন্তান ছাত্র-ছাত্রী, যুবক ও নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা নেচে গেয়ে একে অন্যের গায়ে রঙ মাখে। আয়োজকদের পক্ষে রাধে শ্যাম বীণ বলেন, রাত পর্যন্ত চলবে রঙ খেলা ও নাচ গান। বুধাবার রাত পর্যন্ত এ উৎসব চলবে।
কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই চা-শ্রমিকরা ফাগুয়া উৎসব পালন করে। তবে ব্যতিক্রম ছিল শমসেরনগর চা-বাগানের ফাঁড়ি বাগান কানিহাটিতে। এ চা-বাগানের ছাত্র, যুবক ও চা শ্রমিক মিলে যৌথভাবে মুজিব জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফাগুয়া উৎসব পালন করে।
ফাগুয়ার জন্য চা-শ্রমিকদের চা বাগান কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি দিয়ে থাকেন। সব কিছু ভুলে গিয়ে সকল চা শ্রমিক পরিবার এক হয়ে চা বাগানে উৎসবটি পালন করে। কাদা খেলার পরম ঙ্গলবার সকাল থেকে কমলগঞ্জের ২২টি চা বাগানে চলছে ফাগুয়া উৎসব। বুধবার রাত পর্যন্ত চলবে উৎসবটি। কমলগঞ্জের অন্যান্য চা-বাগানগুলোতেও নাচ ও আর গানের মাধ্যমে চলছে ফাগুয়া উৎসব।