বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে (২৮ মার্চ) পিকেটিং করার জের ধরে বিশ্বনাথে রামপাশা ইউনিয়নের দুই (বৃহত্তর আমতৈল ও ধলিপাড়া) গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় থানায় এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিশ্বনাথ থানার এসআই দিদারুল আলম বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ২৫০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ৩৫ (তাং ২৯.০৩.২১)।
সংঘর্ষের পর আটককৃত উভয় পক্ষের ৫ জনকে মামলায় গ্রেফতার দেখানু হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার মাখরগাঁও (আমতৈল) গ্রামের রফিক আলীর পুত্র আশিক মিয়া (২৮), শান্তিপুর (আমতৈল) গ্রামের মৃত বিলাল উদ্দিনের পুত্র মুছা মিয়া (৩৩), ধলিপাড়া গ্রামের জমির আলীর পুত্র খায়রুল ইসলাম (২৮), একই গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের পুত্র আইয়ূবুল হক (২২), মৃত নজর উদ্দিনের পুত্র কুতুব উদ্দিন (৩৫)।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আমতৈল ও ধলীপাড়া গ্রামের পক্ষে পৃথক পৃথকভাবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আলোচিত হেফাজত নেতা আমতৈল গ্রামের মুফতী ফারুক আহমদকে নিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। হরতালের দিন ফারুক আহমদের ভূমিকা নিয়ে রয়েছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য আর যুক্তিতর্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ-লামাকাজী রোডের পিছের মুখ নামক স্থানে রোববার সকাল থেকেই আমতৈল দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাওলানা ফারুক আহমদের নেতৃত্বে পিকেটিংয়ে নামেন ওই এলাকার হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এসময় পার্শ্ববর্তী ধলিপাড়া গ্রামের ড্রাইভার খায়রুল ইসলাম তার ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট ১৮-৯৮২৩) নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে তাকে বাঁধা দেন হরতালের সমর্থনে পিকেটিংকারীরা। এক পর্যায়ে পিকেটাররা ড্রাইভার খায়রুল ইসলামের উপর হামলা করে। এ সময় ধলিপাড়া গ্রামের লোকজন এসে পিকেটারদের বাঁধা দেন। পরবর্তিতে মুফতি ফারুক আহমদ বৃহত্তর আমতৈল গ্রামের বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ইসলাম বিরোধীরা তাদের উপর হামলা করেছে বলে ঘোষণা দেন। মূহুর্তেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই গ্রামের প্রায় দুই হাজারেরও অধিক মানুষ। হামলা চলাকালে আমতৈল গ্রামের লোকজন ধলিপাড়া গ্রামের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশের সদস্যরা সেখানে গেলে হরতালের সমর্থনে পিকেটারদের নেতৃত্বদানকারী মুফতি মাওলানা ফারুক আহমদ পক্ষের (আমতৈল গ্রামের) লোকজন পুলিশের উপরও হামলা করে। সংঘর্ষে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ৫ সদস্যসহ উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন ৪ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সটগানের প্রায় ৯০ রাউন্ড গুলি ও ৬ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় থানায় এসল্ট মামলা দায়ের ও ৫ জনকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা।
তিনি বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।