বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
বিশ্বনাথে দুই ইউনিয়ন কমিটিকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। যেকোন সময় দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন হয় বিগত ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই। কমিটিতে সভাপতি হন শিতল বৈদ্য ও সাধারণ সম্পাদক হন মোবারক হোসেন। পরবর্তিতে সভাপতি শিতল বৈদ্য বিদেশ গমন করলে ১ম/২য় সভাপতি রেখে ৩য় সহ-সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এক হলেও কার্যকরি কমিটির বড় একটি অংশ পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে থাকে। ছাত্রলীগের অনেকেই বলেন, তাদের ৩১ সদস্যের কমিটির একজন মারা যান ও চারজন বিদেশ চলে যান। এখন ২৫ জনের কমিটিতে সহ-সভাপতি ৭ জনসহ ১৪জন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
রবিবার রাতে উপজেলার দশঘর ও রামপাশা ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সাথে সাথে অপর পক্ষের ১৪ জন স্বাক্ষর করে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবাদ দেয়। সেই প্রতিবাদ পত্রে স্বাক্ষর করেন উপজেলা ছাত্রলীগের ৭জন সহ-সভাপতি, ৩জন যুগ্ম সম্পাদক ও ৪ জন সাংগঠনিক সম্পাদক। সাথে সাথে ওই দুই কমিটিকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য অনুমতি প্রদান করে তারা।
এদিকে, দুটি ইউনিয়নে দুই পক্ষের অনুসারিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর রেশ থাকলেও মাঠ পর্যায়ে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে আতংক বিরাজ করছে।
এবিষয়ে জানতে কমিটির প্রথম সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল করিম মাছুম ও ১ম যুগ্ম-সম্পাদক শাহ বুরহান আহমেদ রুবেল জানান, কার্যকরি পরিষদের কোন সভা বা সিদ্ধান্ত ছাড়াই দুই ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এটা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সেচ্ছাসারিতা। এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। আমরা তৃণমূল ও উপজেলা ছাত্রলীগ মিলে তাদেরকে কমিটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।
এ বিষয়ে কথা হলে কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন বলেন, তৃণমুলে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডকে শক্তিশালী করতে কার্যকরি পরিষদের সভা করেই উপজেলা কমিটির অধিকাংশ মতামতে করেই আমরা ইউনিয়ন কমিটিগুলো পুন:গঠন করতে যাচ্ছি। তারই ধারবাহিকতায় দশঘর ও রামপাশা ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অলংকারি ও সদর ইউনিয়নের কমিটিও পুন:গঠন করা হবে। ছাত্রলীগের এ নেতা জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে অধিকাংশরা বিবাহিত ও অনেকে বিদেশ গমন করে ছাত্রলীগ শুন্যের কৌটায় চলে আসছে। কোন কার্যক্রমও তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি। মোবারক হোসেন আরও বলেন, এখন যারা কোন একটি গ্রুপের হয়ে আধিপত্য বিস্তার ও ছাত্রলীগের কমিটির মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। আমরা কোন ভাইয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে আমরা ছাত্র রাজনীতি করি।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পার্থ সারথী দাশ পাপ্পু বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিলেটে কর্মীসভায় আসলে তারা আমাদেরকে প্রতিটি ইউনিয়নে ছাত্রলীগকে শক্তিশালি করার নির্দেশনা দেন। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী আমারা প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটিকে পুন:গঠন করবো। আর আমরা সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ি এ প্রদক্ষেপ নিয়েছি। পাপ্পু আরও বলেন, যারা ফেসবুকে প্রতিবাদ দিচ্ছে তাদেরকে বারবার আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ও প্রতিটি সভার আগে দাওয়ারপত্র দিয়েছি। তারা কোন একটি সভা বা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। তবে, কোনভাবেই ছাত্রলীগের মধ্যে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।