তাহিরপুরে বড়খাল বিলে ফসল রক্ষায় বাঁধ নেই ১২৬ একর জমিতে

4

তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওর সংলগ্ন লতিফপুর (বড়খাল) নামক বিলে ১২৬ একর (৩৫ হাল) জমিতে বোর ফসল রক্ষার বেড়ি বাঁধ জোটেনি। যার কারণে হাওর পারের কৃষক দুশ্চিন্তায় প্রহর গুণছেন। ফলে সারাবছরের সোনালী ফসল ঘরে তুলা নিয়ে উৎকণ্ঠায় কৃষককুল।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের লতিফপুরের (বড় খাল) নামক বিলে ২টি ছোট্ট ক্লোজার রয়েছে। যে কোন সময় অতি বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলের পানি আসলেই, তলিয়ে যেতে পারে গরিব অসহায় হাওর পাড়ের কৃষকের কষ্টে বোনা বোর ফসল। অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে রোপণ করা হয়েছে সোনালী ফসল। এই রঙিন স্বপ্ন রক্ষা করতে হলে দ্রুত হাওর বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করে ১২৬ একর জমিতে হাওর বেড়ি বাঁধনির্মাণ করতে দ্রুত বরাদ্দ বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানান হাওর পাড়ের কৃষক ।
উল্লেখ্য উপজেলায় ৮৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পি আই সি) গঠন করে ফসল রক্ষা বেড়ি বাঁধ এর কাজ করছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বেড়ি বাঁধে ব্যয় হচ্ছে ১৪কোটি ৪০লাখ টাকা (প্রায়)। কিন্তু কৃষকবান্ধব সরকারের আমলে কেন অসহায় গরিব কৃষকের ফসলি জমি রক্ষা করবেন না সরকার বাহাদুর। এমন দাবী তুলেছেন স্থানীয় কৃষক জনতা।
৩ লাখ টাকার জন্য আনন্দ নগর, লতিফপুর, পাঠাবুকা, জীবনপুর গ্রামের ৪শতাধিক পরিবারের অসহায় গরিব কৃষকের সোনালী ফসল (১২৬একর) জমির ধান ঘরে তুলতে পারবে না, পাহাড়ি ঢলের পানির কারণে এমন টা জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।
বড়খাল নামক বিলের কৃষক পাঠাবুকা গ্রামের জুনায়েদ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, কৃষি বান্ধব সরকারের আমলেও জোটেনি ফসল রক্ষার বেড়ি বাঁধের কাজ। জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করেছি, বেড়ি বাঁধ মেরামত করতে, অবশেষে সংসদ সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হুসেন রতন এর কাছে গিয়ে ডিও লেটার নিয়েছি। বেড়ি বাঁধ নির্মাণের জন্য তাতেও কোন সুরাহা হয়নি। সময় পুড়িয়ে যাচ্ছে । পাহাড়ি ঢল আসার সময় হচ্ছে তবুও বাঁধা হয়নি বড়খাল নামক বিলের খাল। আমরা অসহায় কৃষক বলে আমাদের সোনালী ফসল রক্ষার প্রয়োজন মনে করেন না দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।
স্থানীয় ইউ/পি সদস্য শিমুল মিয়া জানান আমার সাধ্যমত চেষ্টা করে, বিগত দিনে বেড়ি বাঁধ মেরামত করেছি। কিন্তু এবছর আমাদের হাতে কোন প্রকল্প না থাকায় বেড়ি বাঁধ টি মেরামত করতে পারছি না। কিন্তু এটি জনগুরুত্ব পূর্ণ বেড়ি বাঁধ। এই হাওরের ফসল তলিয়ে গেলে হাজার খানিক পরিবার বৈশাখ মাসেই ক্ষুধার্ত থাকবে, অর্ধহারে অনাহারে দিন যাপন করবে পরিবার পরিজন নিয়ে কৃষকরা। তাই বলব দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে, অনতিবিলম্বে হাওরে বরাদ্দ দিয়ে বাঁধটি মেরামত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাই ।
পাঠাবুকা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এই হাওরের ফসল ঘরে উঠলে কৃষকের হাসিতে মুক্তা ঝড়বে। অন্যথায় কৃষকের আর্তনাতে হাওরে শোকের ছায়া নেমে আসবে। আমি কৃষক বান্ধব সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের জোর দাবী জানাই অনতিবিলম্বে বাঁধনির্মাণ করে দিন।
তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদ্মসন সিংহ বলেন আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ প্রকৌশলী রকিবুল হাসান এর কাছে দায়িত্ব দিয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।