কাজিরবাজার ডেস্ক :
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির আলোচিত নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রবিবার দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, দলে সক্রিয় না থেকেও হঠকারী বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। বিশেষ করে, ‘বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার চেয়ে শেখ হাসিনার শাসনামল অনেক ভালো’, ‘বিএনপির কোনো ভিশন নেই’, ‘নেতাদের শরম হবে যখন কর্মীরা তাদের জুতাপেটা করবে’, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ‘বেয়াদব’ বলে আখ্যায়িত করাসহ দলের জন্য অবমাননাকর এমন বক্তব্যের কারণে একাধিকবার দলের পক্ষ থেকে আখতারুজ্জামানকে মোখিকভাবে সর্তক করা হয়। কিন্তু তিনি তা মানেননি। তাই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কার প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ নিয়ে রবিবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মেজর আখতারুজ্জামান। তিনি লিখেছেন, ‘খবরটা শুনে প্রথমে হাসিই পেল এবং তারপরে ভেবে ভালোই লাগল যে, এখনো বিএনপিতে আমার গুরুত্ব ছিল! তারপরে খুব কষ্ট পেলাম।’
সেখানে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি অনেকদিন থেকেই জানি, তারেক রহমানের সঙ্গে আমার রাশি বিপরীতমুখী। তিনি কখনোই আমার মতো করে ভাবেন না। তাই আমি পরাজিত হলে দারুণভাবে খুশি হবো। কারণ তাতে সম্ভবত তারেক রহমানেরই জয় হবে। আল্লাহ তারেক রহমানের বিজয় এনে দিক। আমি এখন আমার মতো করে ভাবতে, লিখতে এবং বলতে থাকি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমি দেখেছি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারো কর্মকাণ্ডে দল যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেক্ষেত্রে বহিষ্কার হওয়া তো সাংগঠনিক নিয়ম। আমি মনে করি এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বরং দলে আরও স্বচ্ছতা আসে।
দলের পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাসহ বিভিন্ন পর্যারের নেতাদের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অনেক উদার। অপরাধ করলেও তিনি মাফ করে দিতেন। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ততটা উদার নন। যেকোনো মূল্যে তিনি দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চান।
তিনি বলেন, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। নেতাকর্মীদের সেই বার্তা দিতেই শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ভোট বয়কটের দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
দলীয় কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় থাকায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু সদস্যপদ হারান।
এছাড়া খুলনা জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি ঘোষণার পর হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করায় অব্যাহতি দেওয়া হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে।