মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাঙালি জাতির অহংকার, প্রখ্যাত সমরবিদ, মহান মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সিইনসি, সংসদীয় গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ, বাঙালি জাতীয়তাবাদের অন্যতম প্রবক্তা, জাতীয় জনতা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক মন্ত্রী, জাতীয় নেতা বঙ্গবীর জেনারেল এম.এ.জি ওসমানীর ৩৭তম মৃত্যু বার্ষিকী ১৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার।
দিবসকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালনের লক্ষ্যে “বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেটের পক্ষ থেকে ২ দিনব্যাপী কর্মসূচির ১ম দিন গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় নাইরপুলস্থ ওসমানী যাদুঘরে শিক্ষিত বেকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সুবিধা বঞ্চিত মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ এবং গরীব মেধাবি (৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি) শিক্ষার্থী যারা আর্থিক সঙ্কটের কারণে ভর্তি হতে পারেনি তাদের মধ্যে নগদ টাকা ও শিক্ষা উপকরণাদি বিতরণ করা হয়।
বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেটের সভাপতি সৈয়ীদ আহমদ বহলুল এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী দেলোয়ার হোসেন জিলনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওসমানী জাদুঘরের সহকারী পরিচালক জিয়ারত হোসেন খান। বক্তব্য রাখেন স্মৃতি সংসদের সহ সভাপতি আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমনু, প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদস্য আমিন তাহমীদ, কয়েছ আহমদ সাগর। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কারী মোঃ নুরুল হক, সেলু মিয়া, চুনু মিয়া, হফিজ ফয়ছল আহমদ, ছবদিল আলম, শমসের আলম, শফিকুল হক, শিপন খান প্রমুখ।
খতমে কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত অংশ গ্রহণ করে এতিম শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং পরিচালনা করেন হাফিজ মাওলানা আমির উদ্দিন (রহঃ) এতিমিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ইসলামপুরের হিফজ বিভাগের প্রধান হাফিজ নজির হোসেন।
মিলাদ শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদান, বঙ্গবীর জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস চেয়ার স্যার ফজলে হাসান আবেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘আশা’র প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল হক চৌধুরী, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের জননন্দিত প্রয়াত মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক এম.এ হক, বিশিষ্ট সাংবাদিক আজিজ আহমদ সেলিম সহ দেশে-বিদেশে মৃত্যুবরণকারীদের রূহের মাগফেরাত ও অসুস্থদের সুস্থতা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা শামসুল ইসলাম।
বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেটের সভাপতির বক্তব্যে সৈয়ীদ আহমদ বহলুল বলেন, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তিতে বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানীকে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান ‘স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা’, দেশবাসী কর্তৃক প্রদত্ত উপাধী ‘বঙ্গবীর’ একান্তই ওসমানীর। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী ‘বীর উত্তম’ নামের পূর্বে ব্যবহৃত ‘বঙ্গবীর’ উপাধী বাতিল করা, বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানীর কর্মময় জীবনী স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ^বিদ্যালয়ের পাঠ্য সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করণ, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমাদের জোর দাবী বঙ্গবীর ওসমানীর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় ভাবে পালনের ঘোষণা, বঙ্গবীর ওসমানীর নামে প্রতিষ্ঠিত সকল স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা, সিলেট শহরস্থ ‘নূর মঞ্জিলে’ প্রতিষ্ঠিত ওসমানী জাদুঘর মূল স্থাপনকে অক্ষুন্ন রেখে আধুনিক স্থাপনা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর বিনির্মাণ করা, ওসমানী নগর উপজেলাস্থা দয়ামীরে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবীর ওসমানীর স্মৃতি গণগ্রন্থাগার অবিলম্বে চলু করার জোর দাবী জানান।
তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবীর ওসমানীর মাজারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বাদ জোহর বঙ্গবীর ওসমানীর বাড়ীতে বঙ্গবীর ওসমানী ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে অংশ গ্রহণ, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে খতমে কোরআন এবং বাদ আছর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে মিলাদ শেষে মরহুমের মাজার জিয়ারত কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা, ওসমানী ভক্ত সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি