সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সারা দেশের মতো আজ রবিবার থেকে সুনামগঞ্জে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। এ জন্য জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ে ৪০টি কেন্দ্র থাকবে। স্বাস্থ্য বিভাগ টিকার দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তবে টিকার নিবন্ধনের জন্য গ্রামগঞ্জে প্রচারণা কম লক্ষ করা গেছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে ৮৪ হাজার ডোজ করোনার টিকা এসেছে। টিকা দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ এসেছে ৮৮ হাজার। রোববার থেকে ৪০টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে থাকবে ১০টি কেন্দ্র। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি করে মোট ৩০টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় টিকা দেওয়ার জন্য কতজন মানুষ নিবন্ধন করেছেন, সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
সুনামগঞ্জে টিকার নিবন্ধনে শহরকেন্দ্রনিক প্রচারণা থাকলেও গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সেটা নেই। তাই টিকার নিবন্ধনে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তথ্য ও সেবাকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ব্যবস্থা রাখার পরও গ্রামপর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রচরাণা না থাকায় লোকজন সেখানে যাচ্ছেন না। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিবন্ধনের জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ ও সহায়তার করার কথা থাকলেও সেটি এখনো সুনামগঞ্জে শুরু হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুনামগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দায়িত্বে থাকা একজন সচিব বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে, কেউ যদি করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করতে আসেন, আমরা যেন সেটির ব্যবস্থা করি। আমরাও ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে সেটি বলে রেখেছি। তবে লোকজন আসছেন না।’ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী নারায়নতলা গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক শাহ আলম জানান, তিনি শুক্রবার সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে তাঁর মায়ের টিকার জন্য নিববন্ধন করেছেন। এ জন্য তিনি টিকার কার্ড পেয়েছেন। তবে টিকা দেওয়ার দিনক্ষণ তাতে উল্লেখ নেই। শাহ আলম বলেন, গ্রামের অনেকেই নিবন্ধনের বিষয়টি জানেন না। এ নিয়ে তেমন কোনো প্রচারণা নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রচারণা বেশি দরকার।
শনিবার দুপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে নতুন ভবনের নিচতলায় করোনার টিকা দিতে ১০টি বুথ প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীরা সেখানে রয়েছেন। একই সময়ে টিকা দেওয়ার বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের নানা নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে থাকা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, এখানে ১০টি বুথ প্রস্তুত থাকবে। তবে টিকা দেওয়া হবে আটটিতে। প্রতিটি বুথে ছয়জন করে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থকর্মী, রেড ক্রিসেন্ট ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। দুজন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন টিকা দেওয়ার দায়িত্বে। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনের জন্য মেডিকেল টিমও প্রস্তুত থাকবে কেন্দ্রে।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. শামস উদ্দিন বলেছেন, জেলায় টিকা প্রদানের সব প্রস্তুতি রয়েছে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রচারণাও আছে। টিকা দেওয়া শুরু হলে মানুষ জানবেন, সেই সঙ্গে প্রচারণাও বাড়বে। এ জন্য সবখানেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া আছে।