কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়ায় পৌরসভার মেয়রসহ দুই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই অবৈধভাবে এক পরিবারের বসতবাড়ীর সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সুমি আক্তার রেবা ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যার অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে দেয়া হয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে দুপুর ২টায় কুলাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবার।
জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুমি আক্তার রেবার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, তারেক আহমদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, সুমি আক্তারের পৈত্রিক বসতবাড়ী পৌরসভার বিহালা এলাকায়। মৌজা নয়াদা সাদেকপুর, জে এল নং-৩৮, খতিয়ান নং-২৭৯, দাগ নং-১২১৩ ও ১২২২ এর ৬৫ শতক ভূমি আছে। তাঁর পিতার মৃত্যুর পর সুমি ও তাঁর তিন বোন রায়না বেগম, লাইলুন বেগম, মুন্না বেগম পৈত্রিক বসত বাড়ীর জায়গা ভোগদখল করে আসছেন। তাঁদের পিতা জীবিত থাকাবস্তায় প্রায় ২৫ বছর পূর্বে গ্রামের লোকদের চলাচলের সুবিধার্থে তাঁদের বসতবাড়ির জায়গার পশ্চিম পাশ দিয়ে রাস্তার জায়গা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ১৫ বছর পূর্বে তৎকালীন মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ উক্ত রাস্তাটি ইটসোলিং করেন। সেই সময় তাঁদের পিতা জীবিত থাকাবস্থায় তৎকালীন মেয়র জুনেদ ও পৌরসভার প্রকৌশলীর পরামর্শমতে রাস্তার ইটসোলিং হতে ৪ ফুট জায়গা রেখে আমাদের বাড়ীর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত রাস্তাটি পৌরসভা কর্তৃক সিসি ঢালাই করার ফলে রাস্তা ছাড়াও অতিরিক্ত ৩ফুট জায়গা অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু রাস্তা ছাড়াও অতিরিক্ত ৩ ফুট অবশিষ্ট জায়গা থাকার পরও গত ১৯ অক্টোবর বুধবার দুপুর দেড়টায় মেয়র অধ্যক্ষ পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার লোকমান হোসেন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলার সুফিয়া বেগমের উপস্থিতিতে অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে নিয়ে তাদের পরিবারের লোকদের না জানিয়ে ও কোনপ্রকার নোটিশ ছাড়াই রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন তৈরি করার জন্য তাদের পৈত্রিক বসতবাড়ির পশ্চিম পাশের ৭ ফুট উচ্চতা ও আনুমানিক ১০০ ফুট লম্বা সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেন। এতে তাদের প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। এসময় বাড়ীতে থাকা সুমির বোন মুন্না বেগম কাজে বাঁধা প্রদান করলে তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুমি আক্তার রেবা, রায়না বেগম, লাইলুন বেগম ও মুন্না বেগম।
এ বিষয়ে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার লোকমান আলী জানান, পৌরসভার নতুন ম্যাপ অনুযায়ী রাস্তার ওপর সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। তাই, ড্রেনের জন্য এটি ভাঙা হয়েছে।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসান জানান, প্রকল্পের কাজ জানুয়ারি মাসে শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে। ড্রেনটির দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। বিহালা এলাকার ঠান্ডা মিয়ার বাড়ি থেকে কুতুব মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ড্রেনটি নির্মাণ হবে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ জানান, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় ড্রেনের কাজ চলছে। কাজের মেয়াদ শেষের পথে। তাই, দ্রুত কাজ শেষ করতে হচ্ছে। ওই পরিবার পৌরসভার অনুমোদন না নিয়ে সীমানাপ্রাচীর অবৈধভাবে নির্মাণ করেছে। এই সীমানা প্রাচীরের কারণে ওই এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। প্রাচীর ভাঙতে মালিকপক্ষকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারা ভাঙেননি। তাই, সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।