কাজিরবাজার ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২৬ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া সফর করার সম্ভাবনা রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়া দেখা তার (মোদি) ইচ্ছা। এটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।’
দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় শীর্ষ বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একসাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বছর উদযাপন করতে ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তার সফর নিশ্চিত হয়েছে। এটি মোটামুটি ঠিক। অনেক কিছুই ঘটবে। আমরা বেশ সাবলীলভাবে এগিয়ে যাচ্ছি।’
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ২৭ মার্চ ঢাকায় শীর্ষ বৈঠকের আগে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চারটি সচিব-পর্যায়ের বৈঠক করবে বাংলাদেশ ও ভারত।
দুই দেশের পানিসম্পদ সচিবদের মধ্যে বৈঠকটি নয়াদিল্লিতে এবং বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং নৌপরিবহন সচিব পর্যায়ের বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
বর্তমানে দুই দেশ শীর্ষ সম্মেলনের বৈঠকে স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া চার থেকে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক নিয়ে কাজ করছে। সচিব-পর্যায়ের চারটি বৈঠক থেকে আসা সুপারিশের ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমঝোতার সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন।
এর আগে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী এবং বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ২০২১ সালকে ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের ৫০তম বার্ষিকী এবং ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করা হবে এ বছর।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে স্মরণ করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মুজিব নগর থেকে নদিয়ার ঐতিহাসিক সড়কের নামকরণ ‘স্বাধীনতা সড়ক’ করতে বাংলাদেশের প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য ভারতীয় পক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠককালে এই সড়কটি যৌথভাবে উদ্বোধন করা হবে।
এছাড়া ফেনী সেতুটিরও উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে মাসুদ মোমেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে এবং বাধা মোকাবিলা করে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্য সচিব-পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে অধিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সকল ধরনের বাধা অপসারণের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
মাসুদ মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোভিড পরিস্থিতিতে ‘এয়ার বাবল’ চুক্তি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমরা এর কার্যকারিতা দেখছি।’
তিনি বলেন, দুই দেশই সীমিত পরিসরে পর্যটক ও শিক্ষার্থীদের ভিসা শিগগিরই পুনরায় চালু করার বিষয়ে আলোচনা করছে।