স্টাফ রিপোর্টার :
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও সুরঞ্জিত সেনের গ্রেনেড হামলার পৃথক ২টি মামলায় এক চিকিৎসকসহ ৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বুধবার সকালে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবির এ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। পরে আদালতের বিচারক পৃথক মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ৩ মার্চ নির্ধারণ করেছেন।
এর আগে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে এই ২ মামলার আসামী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুরজ্জামান বাবর ছাড়া অন্যান্য আসামীদেরকে আদালতে হাজির করা হয়।
এদিকে, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার গতকাল বুধবার ২৭ জানুয়ারি ১৬ বছর পূর্ণ হলো। দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা এ হত্যান্ডের বিচার এখনো আলোর মুখ দেখছে না। সাক্ষী না আসা, আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় ঠিকমতো আদালতে হাজির না হতে পারাসহ বিভিন্ন জটিলতায় বিচার কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রিতায় পড়েছে। এ অবস্থায় বিচার নিয়ে হতাশা কাটছে না নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়দের মনে।
২০০৫ সালের এ দিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। সভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ মোট ৫জন নিহত হন। এতে আহত হন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এমপি এডভোকেট মো. আবু জাহিরসহ ৪৩ জন।
এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। কিন্তু দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা রোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের বিচার শুরু হয় প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে। কিন্তু নানান কারণে বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে।
বিচার নিয়ে হতাশার কথা জানিয়ে নিহত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, হত্যা মামলায় তিনটি তদন্ত হয়েছে। একটির সঙ্গে অপরটির কোনো মিল নেই। আমরা প্রত্যেকবারই চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করেছি। তদন্ত যেখানে সঠিক হয়নি, সেখানে সুষ্ঠু বিচারের আশা তো করা যায় না।
মামলার বাদী সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. আবদুল মজিদ খান জানান, কখনো সাক্ষী না আসা, আবার কখনো গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা বিভিন্ন মামলার আসামি থাকায় ঠিকমতো আদালতে হাজির করা সম্ভব হয় না। এমন জটিলতায় মামলাটির সুরাহা হচ্ছে না। তবে এদেশের মাটিতে কিবরিয়া হত্যার বিচার একদিন হবেই।
মামলার আইনজীবী সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (স্পেশাল পিপি) এডভোকেট সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল বলেন, কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৭১ সাক্ষীর মধ্যে ১২৮ জনই এখনো সাক্ষ্য দেওয়ার বাকি রয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল ৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। বাকী সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে। আশা করা যায় তারা দ্রুতই আসবেন। তবে এ মামলার রায় কবে হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনের বিস্ফোরক দ্রব্যের ৪/২০০৯ নং মামলায় গতকাল বুধবার থেকে বিচারকার্য শুরু হয়েছে। এ মামলায় গতকাল মোট সাক্ষী ১২ জন। এর মধ্যে এ মামলায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহকারী পরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক নামের একজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরবর্তী ৩ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।