রেলওয়েতে যুক্ত হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যান

17

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বৃহৎ নগরগুলোতে ‘লাগেজ ভ্যান’ এর মাধ্যমে পৌঁছানো সহজ হবে।
তবে এ পদ্ধতি চালু করার কোনো সময় কিংবা তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।
লাগেজ ভ্যান চালু হলে কৃষকরা স্বল্প সময়ে অল্প খরচে তাদের উৎপাদিত দ্রব্য সহজে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বাজারজাত করে লাভবান হবেন আর্থিকভাবে। দেশের শহরগুলোতে টাটকা কৃষিপণ্য সহজে পৌঁছানো যাবে। রেলওয়েতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। যা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
২৮টি রেফ্রিজারেটর লাগেজ ভ্যানে পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দ্রব্য ভেদে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন ১০টি মোটরভ্যান ১০টি স্পেশাল কারকেরিয়ার রেলবহরে সংযোজনের মাধ্যমেই বিদেশ থেকে আমদানিকৃত মোটরসমূহ চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আসার সুযোগ থাকবে। লাগেজ ভ্যানগুলো উন্নতমানের বগি সম্বলিত হওয়ার কারণে মিটারগেজ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ব্রডগেজ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির লাগেজ ট্রেন চালানো হবে। আবার অটোমেটিক এয়ারব্রেক সিস্টেম ভ্যানগুলো আন্তঃনগর সব ট্রেনে সংযোজন করে অতিদ্রুত এবং নিরাপদ ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহীদূল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আয়োজনে যশোরের বারোবাজার রেলওয়ে স্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ে বহরে নতুন সংযোজনতব্য অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যানে বাণিজ্যপণ্য পরিবহন শীর্ষক ‘অংশীজন’ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে চুয়াডাঙ্গার উথলি রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহী এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামছুজ্জামান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ, রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহীদূল ইসলাম।
এছাড়া বারোবাজার ও উথলি এলাকার স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন- পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী-আল ফাত্তাহ মো. মাসউদূর রহমান মাসুদ, প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আহছান উল্যা ভূইঞা, প্রধান বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা শফিকুর রহমান, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ডেন্ট আশাবুল ইসলাম।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহন কর্মকর্তা, মো. নাসির উদ্দিন, বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ফুয়াদ হোসেন আনন্দ, বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল, যান্ত্রিক প্রকৌশলী, মমতাজুল ইসলাম সোহান, বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা, রিফাত শাকিল টুম্পা, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী, রুবাইয়াৎ শরীফ প্রান্ত প্রমুখ।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানান, রেলওয়েতে বর্তমানে ৪১টি মিটারগেজ, ১০টি ব্রডগেজ ভ্যান রয়েছে। যেগুলো অনেক পুরোনো। বর্তমানে লোকাল ও মেইল ট্রেনে ব্যবহৃত হয়। তাই এসব ভ্যানে সেবা দেওয়া এখন সম্ভব না। রেলওয়ের রোলিং স্টক সংগ্রহ এর আওতায় ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের জন্য এশীয় ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। একটি কোম্পানির মাধ্যমেই ৭৫টি মিটারগেজ ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের জন্য গত ৩১ আগস্ট চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে সব লাগেজ ভ্যান বাংলাদেশ পৌঁছানো শুরু হবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহীদূল ইসলাম জানান, বর্তমান রেলবান্ধব সরকার রেলওয়ের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সে অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান। বিগত কয়েক বছর কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও কৃষকরা প্রতিযোগিতামূলক যথাযথ পরিবহন সুবিধার অভাবে ফসলের যৌক্তিক মূল্য পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য শাক-সবজি মৌসুমি ফল, ফুল এবং অন্যান্য পচনশীল দ্রব্যাদি মাছ, মাংস, দুধ, দুগ্ধজাত খাবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব স্থানে সহজে স্বল্প মূল্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে। লাগেজ ভ্যানে ট্রেনের মাধ্যমে কৃষিপণ্য পরিবহনের যদি সুযোগ সৃষ্টি হয়, কৃষক ও গ্রাহক উপকৃত হবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।