স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট নগরীর বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় আপন ভাতিজাদের নির্যাতনে বসতভিটায় থাকতে পারছেন না এক প্রবাসী। বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ ওই প্রবাসীকে মারধর করে শারীরিকভাবে নির্যাতনেরও অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন নগরীর বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকার একতা ৫৪ নং বাসার বাসিন্দা মো. মিনু মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে মিনু মিয়া বলেন, আমি এবং আমার আরও প্রবাসী চার ভাই দীর্ঘদিন প্রবাসে অবস্থান করে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তির ওপর তিনতলা ভবন নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। ভবন নির্মাণের সময় আমার আরেক ভাই আব্দুল খালিক চরম বিরোধিতা করেন। এমনকি আমাদের মরহুম পিতার নির্মিত একটি টিনশেড ঘর তিনি দেশে অবস্থান করার কারনে জোরপূর্বক দখল করে রাখেন। আমরা শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কোন প্রতিবাদ না করে আমাদের পৈত্রিক বসতভিটার পেছনের দিকে পতিত ভূমিতে আমরা পাঁচ ভাই ও এক বোনের স্বত্বের উপর উক্ত তিন তলা ভবন নির্মাণ করি। পরবর্তীতে আমার ভাই আব্দুল খালিক ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে তার তিনপুত্র যথাক্রমে কয়েছ আহমদ সানী, ফয়েজ আহমদ সনি, শোয়েব আহমদ এবং এক মেয়ে সাথি বেগম ও স্ত্রী জাহানারা বেগম শোভাকে রেখে মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী সন্তানদের আমি আশ্রয় দিয়ে লালন পালন করে বড় করেছি। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে অবস্থান করায় আমি আগেরমত তাদেরকে আর টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারছি না। যে কারনে তারা আমাকে এবং আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। এমনিক প্রতিনিয়ত আমাদেরকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেও কোনো ফলাফল পাইনি। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে গত বছরের ২৪ জুন কোতোয়ালি মডেল থানায় আমার ভাতিজাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি। পাশাপাশি আমাদের বসতবাড়ি রক্ষার জন্য আদালতে আরেকটি বাটোয়ারা মোকদ্দমা দায়ের করি। আইনের স্মরণাপন্ন হওয়ায় আমার ভাতিজা, ভাতিজি এবং তাদের মা আমার ওপর আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি সমাধান করে দেবেন বলে আমাকে মামলা তুলে নিতে অনুরোধ করেন। কাউন্সিলরের কথায় আশ^স্ত হয়ে গত বছরের ২০ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত মামলাটি আমি তুলে নেই। কিন্তু পরবর্তীতে কাউন্সিলরের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি বিষয়টি নিয়ে আর কোন পদক্ষেপ নেননি। একপর্যায়ে আমার ভাতিজারা গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আমার ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে এবং আমার ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেয়। এ ঘটনায় আমি চিকিৎসাধীন থাকায় আমার স্ত্রী কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আমার ভাতিজারা তাদের এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় আমারদের পূর্বেই থানায় গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আমার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় আমার ভাতিজারা আদালত থেকে জামিন নেয়। এর পর থেকে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাদের অব্যাহত হুমকি-ধমকির কারণে আমি পুনরায় গত ৯ ডিসেম্বর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। তবুও তারা থামছে না। তারা আমার পরিবারের উপর হামলা করে আমাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসায় রাত পার করছি। সংবাদ সম্মেলনে মিনু মিয়া তার বসতভিটা ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।