স্টাফ রিপোর্টার :
রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করতেই সিলেট সদরের ছালিয়াগ্রামের আবুল কালাম তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার এবং মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করছেন বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফখরুল আলম। নিজের মালিকানাধীন দু’টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের হিসেব-নিকেষ চাওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এসব করছেন কালাম; এজন্য তিনি তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতাও কামনা করেছেন।
রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ফখরুল আলম। লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, তার পরিবার খাদিমনগর ইউনিয়নের একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার। একই সাথে ব্যবসায়িক সূত্রে সিলেটের সর্বমহলে খ্যাতিও রয়েছে। কিন্তু একটি মহল এ পরিবারের সুনাম বিনষ্ট এবং রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতেই বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কালামের মাধ্যমেই তা বাস্তবায়নের অপচেষ্টায় রয়েছে তারা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ছালিয়া গ্রামের মৃত মকবুল আলীর পুত্র মো. আবুল কালামকে ২০১৬ সালে তাদের দুটি প্রতিষ্ঠান এফ ইসলাম এন্টারপ্রাইজ এবং আশারআলো স্টোন ক্রাশারের ম্যানেজারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আত্মীয়তার কারণে ২০২০ এর মাঝামাঝি তার প্রতি সবধরণের বিশ্বাসও ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম। এমনকি গাড়িগুলোর ইনকামের দৈনিক হিসেব নিক্সেটুকু ও নিতে পারিনি। সবকিছুই কালাম দেখাশুনা করতেন। সেই সুযোগে কাজে লাগিয়ে তিনি দুই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ৪টি ট্রাকের কাগজপত্র এবং ব্যবসার যাবতীয় হিসেবের খাতাপত্র তসরূপ করেন। গত ২৪ আগষ্ট তার কাছে হিসেব জানতে চাওয়ার পর থেকেই তিনি হিসেব না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এরপর ২৭ আগষ্ট তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করাও হয়। পরে ডায়েরিটি মামলায় রূপান্তরিত হলে তিনি কারাগারেও যান। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আসেন।’
ফখরুল আলম বলেন, ‘হিসাব নিকাশ চাওয়া আর হিসাব নিকাশ না দেয়াতে মামলা করায় সে আমার উপর ক্ষেপে যান। আর এ কারনেই কালাম নিজেকে ব্যবসায়িক অংশীদার দাবি করছেন। কিন্তু ব্যবসার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোন কাগজপত্রে এমনকি ট্রেড লাইসেন্সের সবকটিই আমার এক্স নামে নিবন্ধিত; যে কারণে তার এসব দাবি বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই বলে আমি মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দুই প্রতিষ্ঠানের সব রকম ক্রয় বিক্রয়ের রশিদ এবং নগদ ভাউচারে সে স্বাক্ষর করেছে এবং রশিদ ও ভাউচারগুলো নিজের হাতেই লিখেছেন ম্যানেজার কালাম। এছাড়া তিনি ক্রয়কৃত একটি ট্রাকের প্রত্যেকটি কিস্তিও নিজেই জমা প্রদান করেছেন। এছাড়া ব্যবসার সব বিল আর ভাউচারে আবুল কালামের স্বাক্ষর ম্যানেজার হিসেবেই রয়েছে। তবুও তিনি নিজেকে এ প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হিসেবে দাবি করে বিভ্রান্তি ও মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এবং চেক বইসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে গত ১০ অক্টোবর সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন আছে বলেও জানান ফখরুল।
তিনি আরও দাবি করেন, গত ২ সেপ্টেম্বর ডাকযোগে একটি উকিল নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি জনৈক ব্যক্তি আমার নামীয় একাউন্টের ১০ লাখ টাকার একটি চেক ডিজ অনার করিয়েছেন। মূলত আবুল কালামের প্ররোচনায় ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোন সমাধান না হওয়ায় গত ১০ অক্টোবর ষ্ট্যার্ন্ডাড ব্যংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে সিলেট শাখার ম্যানেজার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়েরও হয়েছে।’ তিনি প্রতারক আবুল কালামের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে এবং তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের হস্তক্ষেপ করেছেন তিনি।