কাজিরবাজার ডেস্ক :
৫ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে আসতে ‘করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট’ বাধ্যতামূলক করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। যদিও প্রায় ৯টি এয়ারলাইন্স এই নির্দেশনা অমান্য করেছে। বারবার সর্তক করার পরও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় ইতোমধ্যে তিনটি এয়ারলাইন্সকে জরিমানা করা হয়েছে। এবার আরও কঠোর অবস্থানে গেলো বেবিচক। নতুন নির্দেশনায় বেবিচক বলছে, ‘কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট’ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করলে সর্বোচ্চ চার সপ্তাহের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের অনুমতি বাতিল করা হবে।
স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে নতুন নির্দেশনায় বেবিচক বলছে, প্রথমবার নিয়ম ভাঙলে একটি ফ্লাইটের অনুমতি বাতিল করা হবে। দ্বিতীয়বারের ক্ষেত্রে শাস্তিÍ তিনটি ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা। এরপরও যদি কোনও এয়ারলাইন্স নিয়ম না মানে, সেক্ষেত্রে তৃতীয়বারের জন্য এক সপ্তাহ এবং চতুর্থ বারের জন্য চার সপ্তাহ ফ্লাইট স্থগিত করা হবে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের।
শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নির্দেশনা মেনে চলা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে ডিসেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করে সার্কুলার দেয় দেশের আকাশপথের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেবিচক। এই নির্দেশনা কার্যকর করা হয় ৫ ডিসেম্বর থেকে।
করোনা মহামারির দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এ কারণে বিদেশ থেকে দেশে আসতে করোনা সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করে বেবিচক। তবে এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে কয়েকটি এয়ারলাইন্স। এসব এয়ারলাইন্স হচ্ছেÍ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সালাম এয়ার, কুয়েত এয়ারওয়েজ, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, এয়ারএশিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া, গালফ এয়ার ও তার্কিশ এয়ারলাইন্স। এই এয়ারলাইন্সগুলোকে মৌখিকভাবে সর্তক করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ব্যবস্থা নিতে ৯টি এয়ারলাইন্সের তালিকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়। অন্যদিকে বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, এয়ারএশিয়া, মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সকে জরিমানা করে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে কোনও রকম ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।’
বেবিচক নির্দেশনা দিয়েছে, বাংলাদেশে আসতে হলে সব যাত্রীকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে এবং কেবলমাত্র নেগেটিভ যাত্রীরাই আসতে পারবেন। বিমানবন্দরে সেই নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। একইসঙ্গে বিমানবন্দরে আসার পর যাত্রীর মাঝে করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ আছে কিনা, তা অনুসন্ধান করা হবে। কোনও যাত্রীর উপসর্গ দেখা গেলে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেও তাকে সরাসরি নির্ধারিত হাসপতালে পরবর্তী পরীক্ষা ও চিকিৎসা এবং আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হবে। তবে কোনও যাত্রীর মধ্যে উপসর্গ দেখা না গেলে তাকে নিজ বাড়িতে গিয়ে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। বাংলাদেশি শ্রমিক, যাদের বিএমইটি কার্ড আছে, তারা যে দেশ থেকে আসবেন সে দেশে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা সহজলভ্য না হলে, অ্যান্টিজেন বা অন্য কোনও গ্রহণযোগ্য পরীক্ষার সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।