জেড এম শামসুল :
আজ ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অব্যাহত হামলায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে যেখানে সেখানে বাঙালি জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে হত্যাযজ্ঞ সহ নারী নির্যাতন রাস্তা ঘাট, ব্রীজ সরকারি বেসরকারি স্থাবর অস্থাবর সহায় সম্পত্তি লুটপাট শুরু করে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। এদিন শত্র“র সঙ্গে যুদ্ধ করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমীন। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী রাতভর প্রচন্ড যুদ্ধে শত্র“মুক্ত হয় আশুগঞ্জ। আশুগঞ্জ মুক্ত হওয়ার পর হানাদার বাহিনী নিরুপায় হয়ে পড়ে। তারা দুর্বার গতিতে ঢাকার দিকে দৌড়াতে থাকে। মিত্রবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে নরসিংদীতে নামানো হয় ভারতীয় ছত্রিসেনা। এদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবর বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে মরক্কোতে অবস্থা নেয়। এদিন পাকিস্তানীদের আরেক মিত্র চীন ভারতের সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করে। ভারতীয় সেনাপ্রধান পাকিস্তানী জেনারেলদের প্রতি আত্মসমর্পণের জন্য আহবান জানানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগাশাহী মহা সচিবের সঙ্গে দেখা করে তার দেশের সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ব্যক্ত করেন। এদিন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চীনের প্রতিনিধি পূর্ব পাকিস্তানে আক্রমণের জন্যে ভারতের সমালোচনা করে বলেন ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করে পূর্ব পাকিস্তান দখল করতে চায়।
এদিন মিত্রবাহিনীর বিমান দখলদার বাহিনীর স্থাপনাগুলোতে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে। জাতিসংঘ বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা বিবেচনায় বিমান হামলা বন্ধের জন্য ভারতের প্রতি আহবান জানায়। এদিকে মুুক্তিবাহিনী মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় গেরিলা হামলায় তীব্রতা বাড়িয়ে সামনের দিকে এগুতে থাকে। হানাদার বাহিনী পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে হত্যাযজ্ঞের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। দেশময় আতংকের সৃষ্টি হয়।