স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) শহরতলীর কুমারগাঁওয়ে ১৩২/৩৩ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ৩১ ঘণ্টার বেশি সময় পর গ্রাহকদের আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে শুরু করেছে পিডিবি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নগরী ও শহরতলীর কিছু এলাকায় এই বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হয়।
সিলেট বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ বিউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামছ-ই-আরেফিন জানান, বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ডিভিশন ১ ও ২ আওতাধীন নগরীর কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও সকল স্থানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।
এদিকে-নগরীর বন্দরবাজার, আম্বরখানা, সোবহানীঘাট, নাইওরপুল ও শাহজালাল উপশহর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বিদ্যুৎ পাওয়ার কথাটি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে সিলেট মহানগরী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য ‘টেস্ট রান’র প্রস্তুতি নেয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমারগাঁও গ্রিড সাব স্টেশনের মেরামত সম্পন্ন হয়েছে। ৫টার আগে ‘টেস্ট রান’ করা হয় এবং এটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়। অপরদিকে বুধবার বেলা ২টার দিকে গাজীপুর থেকে পাওয়ার ট্রান্সফরমার এসে সিলেটে পৌঁছায়। নতুন পাওয়ার ট্রান্সফরমার বসানোর পর পুরো সিলেট মহানগরী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতে পারে বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে দুটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার-এর জায়গায় একটি দিয়ে আপাতত বিদ্যুৎ চালু করার চেষ্টা করছে পিডিবি। ফলে আপাতত: কম লোড ভাগ করে বিভিন্ন ফিডারে দেয়া হবে। তাই বিদ্যুৎ আসার সঙ্গে সঙ্গে সবাই একসঙ্গে ফ্রিজ, মটরসহ ভারি ইলেকট্রনিক সামগ্রী চালু না করার আহবান জানিয়েছেন পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন। তা না হলে ওভার হিটেড হয়ে ফের বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগুনে প্রায় ৭০ কোটি টাকার ২৫/৪১ এমবিএ দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। ট্রান্সফরমারগুলোর বাইরের অংশ পুড়লেও ভেতরে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরদিকে গ্রিডে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ২শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন উপ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুমারগাঁওয়ে পিডিবির ৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে ট্রান্সমিটারের জ্বালানি তেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে অগ্নিকান্ডে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। অন্ধকারে পতিত হন প্রায় ২০ লাখ গ্রাহক। বাসা-বাড়িতে দেখা দেয় পানিসহ নানা সংকট। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এরপর প্রায় ৩১ ঘন্টা পর গতকাল সন্ধ্যার দিকে এই বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় আংশিক আসা শুরু হয়।