স্টাফ রিপোর্টার :
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আজ শনিবার শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা ও দীপাবলী অনুষ্ঠিত হবে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পুজা বা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এবার করোনা মহামারীর দুর্যোগ মাথায় নিয়েই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পুরোহিদের মতে, আজ শনিবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটে পূজা আরম্ভ হবে। রাত ৩টায় পুষ্পাঞ্জলি প্রদান এবং রাত ৪টায় হোম অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভক্তদের মধ্যে পুস্পাঞ্জলি প্রদান করা হবে বলে ইতিপূর্বে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপীকা শ্যাম পুরকায়স্থ চয়ন অনুরোধ জানিয়েছেন।
হিন্দু পূরাণ মতে কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালি নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুন্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। এছাড়া কালীপূজার দিন হিন্দু সম্প্রদায় সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দীপাবলী।
দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মন্ডপে মৃন্মময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামসহ শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা উদযাপনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার ১২ নভেম্বর সিলেট জেলা মহানগরে আয়োজিত সকল পূজা মণ্ডপের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে। বিবৃতিতে বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আঙ্গিকে সরকারের সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্যামাপূজা আয়োজনের অনুরোধ করেন। তারা বলেন, পূজা মণ্ডপে পুরোহিত, পূজারী ও সকল দর্শনার্থীদের অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দর্শনার্থীগণ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করবেন। অধিক সময় কোন দর্শনার্থী পূজা মণ্ডপে অবস্থান করবেন না, সাউন্ড সিস্টেম বাজানো থেকে বিরত থাকবেন। কালীপূজা বিসর্জনে শোভাযাত্রা করা যাবে না। নেতৃবৃন্দ পূজার আনুষঙ্গিকতা বজায় রেখে সম্পূর্ণ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা আয়োজনের অনুরোধ জানান। বিবৃতিতে নেতৃৃবৃন্দ দীপাবলি ও শ্যামাপূজা উপলক্ষে পূজার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় সকল আতশবাজি ফুটানো ও উড়ানো থেকে বিরত থাকারও আহবান জানান। বিবৃতি দাতারা হলেন- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপীকা শ্যাম পুরকায়স্থ চয়ন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, মহানগর শাখার সভাপতি সুব্রত দেব, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত।