স্টাফ রিপোর্টার :
বালাগঞ্জের দেওয়ানবাজারে আপন বড় ভাই কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণ রক্ষায় পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ছোট ভাই। এমনকি প্রশাসনের নিকট বারবার গিয়েও সহযোগিতা পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের আলাপুর গ্রামের বাসিন্দা জমির আলী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জমির আলী বলেন, বিগত কিছুদিন আগে আমার বড় ভাই আমির আলীর পুত্র জসিম উদ্দিন কাতার যেতে আমার কাতার প্রবাসী শ্যালক গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ফারদিনের নিকট যোগাযোগ করে কথাবার্তা পাকাপোক্ত করে। ৩ লাখ টাকার চুক্তি হলেও জসিমের পিতা ২ লাখ ৮ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা জসিম বিদেশে গিয়ে দেবে বলে কথা দেন আমির আলী। কিন্তু কাতার গিয়েই নির্ধারিত কোম্পানি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় জসিম। এরপর সে আর অবশিষ্ট টাকা আমার শ্যালককে দেয়নি। হঠাৎ করে জসিমের পিতা আমার বড় ভাই আমির আলী জানান, জসিম নাকি কাতারে গুম হয়ে গেছে। এজন্য চুক্তির ৩ লাখ ও আরও ৫ লাখসহ মোট ৮ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না বলে আমাকে হুমকি দেন তিনি। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার উপর শুরু হয় নির্যাতন। পরে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কোম্পানি ছেড়ে অন্যত্র গেলেও জসিম রুজি করে বাড়ীতে নিয়মিত টাকা প্রেরণ করছে।
জমির বলেন, গত ১৮ আগষ্ট বিকেলে জসিমের পিতা আমির আলী, আমির আলীর ছেলে শামীম আহমদ, আলিম আহমদ, স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও মেয়ে ফারজানা বেগম আমার বসতঘরে প্রবশে করে আমার গলায় চেপে ধরে মাথা ও পিটে আঘাত করে। তাদের আঘাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এ সময় তারা আলমিরা ভেঙ্গে ২ ভরি ওজনের দুটি স্বর্ণের বালা, ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের কানের দুল ও কাপড়-চোপড় নিয়ে যায়। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক আমাকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের ১১ নং ওয়ার্ডে আমি চিকিৎসাধীন ছিলাম। এরপর ভয়ে আর বাড়ীতে যেতে পারিনি। এ ঘটনায় বালাগঞ্জ থানায় মামলা দিলেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। এরপর নিরুপায় হয়ে আমি সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। এ ঘটনার পর আমি প্রাণ ভয়ে সিলেট নগরীর একটি মেসে বসবাস করছি। আমার স্ত্রী-সন্তানরা গোলাপগঞ্জে বসবাস করছেন। আমার বড় ভাই ও তার সন্তানেরা হুমকি দিয়ে বলেছে, বাড়ীতে গেলে আমার হাত বা পা কেটে ফেলবে। আমার স্ত্রীকেও নির্যাতন করবে। তাদের ভয়ে আমি নিজের বসতভিটায় যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং তাদের অব্যাহত হুমকিতে আমি পরিবার নিয়ে জীবন রক্ষায় হন্য হয়ে ঘুরছি। সংবাদ সম্মেলনে জমির আলী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।