স্টাফ রিপোর্টার :
করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা দেবীর বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠী পূজা। ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ, অর্থ্যা সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। মাতৃরূপে মন্ডপে মন্ডপে ঠাঁই নেবেন দেবীদুর্গা। ঢাকে পড়বে কাঠি, ধূপের ধোঁয়া আর ঢাক-ঢোলের সঙ্গে ভক্তিমন্ত্রে মেতে উঠবে পূজা মন্ডপ। খড়গ-কৃপাণ, চক্র, গদা, তীর-ধনুক, ত্রিশুল আর কল্যাণ নিয়ে উপস্থিত হবেন এবং মহিষাসুর বধ করে হেসে উঠবেন দেবী।
বুধবার সায়ংকালে দেবীর ছিল বোধন। এবার দেবীর দোলায় (পালকি) আগমন, ফলম মড়কং ভবেৎ অর্থাৎ বিশে^ অসুখ বিসুখ বাড়বে ও গজে (হাতি) গমন, ফলম শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা অর্থাৎ সারা বিশ^ ফসলে পরিপূর্ণ হবে। কাল শুক্রবার ২৩ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২৪ অক্টোবর শনিবার মহাঅষ্টমী, ২৫ অক্টোবর রবিবার মহানবমী শেষে ২৬ অক্টোবর সোমবার মহাদশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান। পূজা চলাকালে প্রতিদিনই অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ আরতির আয়োজন করা হবে। তবে এবার বৈশি^ক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে পূজা অনুষ্ঠান ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, আর উৎসব না রাখার কথা বলেছেন পূজা সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, এ বছর সিলেটে ৫৮৪টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় পারিবারিক ও সার্বজনীন মিলিয়ে ৫২০ টি এবং সিলেট মহানগরে ৬৪টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর সিলেট জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬০৮টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ হিসেবে এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমেছে ২৪টি। শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২০ নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য স্বল্প জনসমাগম এবং করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বৃদ্ধি এড়াতে এসএমপি পুলিশ ২০ নির্দেশনা জারি করেছে।
শাস্ত্রে মতে, আসুরিক শক্তির বিনাশ আর শান্তি, কল্যাণ আর সমৃদ্ধি লাভের জন্য হিন্দু সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মা দুর্গার আরাধনা করে আসছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে বিশ^ব্যাপী মঙ্গল ধ্বনি দিয়ে মা দুর্গা এ সময় কৈলাশ ছেড়ে মর্ত্যে আসেন। দুর্গাপূজা হয় আশি^নের শুক্লা ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত। দেবী দুর্গার যে মূর্তি সচরাচর দেখা যায়- সেটি সপরিবারে দেবী দুর্গার মূর্তি। এই মূর্তির মধ্যে দেবী দুর্গা সিংহ বাহিনী ও মহিষাসুর মর্দিনী। দেবীর ডান দিকে উপরে লক্ষ্মী ও নীচে গণেশ। বাঁ দিকে উপরে সরস্বতী ও নীচে কার্তিক। সেই সাথে রয়েছে তাদের বাহন পেঁচা, ইঁদুর, হংস ও ময়ূর। আর দেবীর কাঠামোর উপরে শিবের মূর্তি স্থাপন করা হয়।
মহানগরীর পূজামন্ডপগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, দাঁড়িয়াপাড়ার সনাতন যুব ফোরাম, চৈতালী, রামকৃষ্ণ মিশন, বলরাম জিউড় আখড়া, বালুচর দুর্গাবাড়ী, লামাবাজার তিন মন্দির, কাজলশাহ, মাছুদিঘিরপারের ত্রিনয়নী, রাজবাড়ী, গোপালটিলা, যতরপুর, চালিবন্দর, মাছিমপুর, তোপখানা, গোটাটিকর ও শিববাড়ি ইত্যাদি।