জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, লড়াই হবে ত্রিমুখী

25

একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলার গ্রাম গ্রামান্তর ঘুরে রেড়াচ্ছেন জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনী প্রচারণায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিরনেতারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ভোটাররা মনে করেন সঠিক ভোট হলে এবার নুরুল হক আফিন্দি, ইকবাল আল-আজওদ ও মাসুম মাহমুদ তালুকদারের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে ত্রিমুখী।
জামালগঞ্জ উপজেলা উপ-নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সদ্য প্রয়াত উপজলো চেয়ারম্যানের পুত্র জামালগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল আল আজাদ, আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ফয়জুল আলম তালুকদার মোহন, বিএনপির দলীয় প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাচনা বাজার ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল হক আফিন্দী, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সহ স্থানীয় সরকারি বিষয়ক সম্পাদক মাসুম মাহমুদ তালুকদার। জয়ের ব্যাপারে তারা সবাই আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকেই দলটি দ্বিধাবিভক্ত। জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী পরিষদের ভোটে ৫৭ ভোট পেয়ে প্রথম হন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম। ২৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন সাংবাদিক আকবর হোসেন, ২৩ ভোট পেয়ে ৩য় স্থান লাভ করেন জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দিজেন্দ্র লাল দাস, প্রয়াত চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদের ছেলে ইকবাল আল আজাদ ৮ ভোট, মেয়ে শাহানা আল আজাদ ২ ভোট এবং মাজহারুল ইসলাম রোকন ২ ভোট পান। আরেক প্রার্থী গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু কোন ভোট পাননি।
২১ সেপ্টেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে কেন্দ্রীয় নেতারা ইকবাল আল আজাদকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতকে মূল্যায়ণ না করে প্রার্থী চূড়ান্ত করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে।
ভোটাররা মনে করেন জামালগঞ্জ দলীয় প্রভাবের চেয়ে আঞ্চলিকতা ও সাম্প্রদায়িকতা অনেক শক্তিশালী। সে হিসেবে নুরুল হক আফিন্দি, ইকবাল আল আজাদ ও মাসুম মাহমুদ তালুকদার নির্বাচনী ভোটের মাঠে সমানে সমানে অবস্থান করছেন। এবারের নির্বাচনে রেজাউল করিম শাশীমের ভোটাররা যার দিকে ধাবিত হবেন ভোটের পাল্লা তার ভারী হবে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল হক আফিন্দী (ধানের শীষ) বলেন, জামালগঞ্জের মানুষের সকল অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আমি পাশে ছিলাম, আছি থাকবো। আমার বিশ্বাস সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামালগঞ্জের মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে। ‘আমি বিশ্বাস করি প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকবাল আল আজাদ (নৌকা) বলেন, আমার বাবা সারাজীবন মানুষের পাশে ছিলেন। সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় তিনি বার বার নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বাবার দেখানো পথে হাঠতে চাই। মানুষ আমাকে ভালোভাবে গ্রহণ কছে। বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। সতন্ত্র প্রার্থী মাসুম মাহমুদ তালুকদার (আনারস) বলেন, আমার প্রয়াত বাবা সামছুল আলম তালুকদার ঝুনু মিয়াও ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আমার ছোট ভাই সাজ্জাদ মাহমুদ তালুকদার সাজিদও জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। ‘আমি আমার গ্রাম-এলাকাবাসীসহ সকল মুরব্বিদের মতামত ও অনুমিত নিয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমি জনগণের মনোনীত প্রার্থী। যুবসমাজ আমার পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। আমি বিশ্বাস করি সুষ্টু নির্বাচন হলে জামালগঞ্জের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল আলম মোহন (ঘোড়া) বলেন, আমার পিতা বাবা প্রয়াত আবুল মনুসর লাল মিয়া ছিলেন জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আমি জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আশা করি এবার জামালগঞ্জের মানুষ আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ^জিত দেব বললেন, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। কোন প্রার্থী এখনো কোন অভিযোগ জানান নি। আমরা আশা করছি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ গত ৯ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুত বরণ করলে চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২০ অক্টোবর এই উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৪৬ টি কেন্দ্রে ঐ দিন এক লাখ ১৭ হাজার ৪শ ভোটার ভোট প্রদান করে তাদের নতুন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।