বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
বিশ্বনাথে বোনের বাসায় আপন ভাতিজিকে চাচা ধর্ষণ করার অভিযোগে চাচা আবদুর রশিদ (৩৫)-কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা সদরের নতুন বাজারস্থ আরামবাগ এলাকার (আক্তার মিয়ার বাসা) ধর্ষণের ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে চাচা আবদুর রশিদকে একমাত্র অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতা ভাতিজি। মামলা নং ১১।
গ্রেফতারকৃত রশিদ গোলাপগঞ্জ থানার ফুলবাড়ী (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের মৃত মনফর আলীর পুত্র। তবে সে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বিশ্বনাথেরগাঁও গ্রামে বসবাস করে নতুন বাজার এলাকায় বীজ বিক্রির ব্যবসা করে আসছে। শনিবার দুপুরে রশিদকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ এবং ভিকটিম যুবতীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি-তে ভর্তি করা হয়েছে।
বাদির দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার একমাত্র অভিযুক্ত আবদুর রশিদ সম্পর্কে ধর্ষিতার আপন চাচা। আর পিতা মারা যাওয়ায় অভাবের সংসারের হাল ধরাতে প্রায় ২ বছর পূর্বে ফুফুর সাথে বিশ্বনাথে এসে টেইলারিং শিখার জন্য আল-হেরা শপিং সিটিস্থ তাহনা টেইলার্সে ভর্তি হন বাদী। সেখানে কাজও শেখেন বাদী। গ্রেফতার রশিদও উপজেলার বিশ্বনাথেরগাঁও গ্রামে একটি বাসায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলো। তার (রশিদ) অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় ৪ বছর পূর্বে স্ত্রী নিজের পিত্রালয়ে চলে যান।
প্রায় ৬ মাস থেকে ভিকটিমের প্রতি কু-নজর দেয় রশিদ। আর ২ মাস পূর্বে বাদী তার ভাইয়ের বিয়ের জন্য গোলাগঞ্জের ফুলবাড়ী (দক্ষিণপাড়া) গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে যান। গ্রেফতারকৃত রশিদও বাড়িতে যায়। বিয়ের পরের দিন সন্ধ্যায় আত্মীয়-স্বজন চলে যাওয়ার পর বাদিকে বাড়িতে একা পেয়ে ভয়ভিতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে রশিদ। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে বাদি তখন এব্যাপারে তার পরিবারের কাউকে কিছু বলেননি।
পরবর্তীতে ভিকটিম আবারও বিশ্বনাথে তার ফুফুর বাসায় চলে আসেন এবং দর্জি কাজ করতে থাকেন। ভিকটিমের সাথে প্রায় সময় ফুফুর বাসা ও আল-হেরা মার্কেটে দেখা করে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি প্রদান করতো গ্রেফতারকৃত রশিদ।
শুক্রবার দিবাগত রাতে (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ভিকটিমের ফুফুর বাসায় আসে আবদুর রশিদ। সেখানে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে রাত ১২টার দিকে তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে বলে বাদিকে বোনের বাসায় নিজের থাকার রুমে যাওয়ার কথা বলে গ্রেফতারকৃত আবদুর রশিদ। বাদি সরল বিশ্বাসে সেই রুমে যাওয়ার পর রশিদ রুমের দরজা বন্ধ করে বাদিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। রুমের ভিতরে অনেকক্ষণ হওয়ায় একপর্যায়ে বাদির ফুফু দরজায় ডাকাডাকি করলে বিছানা থেকে বি-বস্ত্র অবস্থায় দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন বাদি। এসময় বাদির ফুফু ঘটনার বিস্তারিত শুনেন। এসময় আশপাশের লোকজনও তাদের বাসায় চলে আসেন।
একপর্যায়ে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত আবদুুর রশিদকে আটক করে ও বাদিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
মামলা দায়ের ও অভিযুক্তকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, গ্রেফতারকৃত আবদুর রশিদকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ ও বাদিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে ভর্তি করা হয়েছে।