মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাইয়ে যাওয়া হলো না ফাস্টফুড শপের কর্মচারি কামরুল ইসলামের (২৪)। তার আগে আপন ছোট ভাই শিবিরের দুর্ধর্ষ কর্মী তানভীর আহমদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়। বেদনাবিধূর ও নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটে গত বুুধবার দিবাগত রাতে। উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামে। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে শিবিরের দুর্ধর্ষ কর্মী তানভিরকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখি আদালতে তুলা হয়।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ঘাতক তানভীর (১৭) পলাতক ছিল। সারাদিন বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিয়ানীবাজার থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিছরাবন্দ এলাকায় তার বোনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
এলাকাবাসী জানান, চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে ঘাতক তানভীর আহমদ। সে ইসলামী শিবিরের সক্রিয় সদস্য হিসেবে দলের সকল সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করে। এমনকি ঐ বাড়ির সবাই বিএনপি ও জামায়াত-শিবির এর রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের পিতা-মাতা অনেক আগেই মারা গেছেন। নিহতরা ৫ ভাই ও বোনের মধ্যে এক ভাই প্রবাসে থাকেন।
বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহিদুল হক বলেন, নিহত কামরুলের বুকের মধ্যখানে, মুখের দু’পাশে এবং পায়ে দা’র কোপের জখম ছিল। তিনি বলেন, হয়তো প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে নিহত কামরুলের জানাযার নামাজ বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব কোনাগ্রাম জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মানুষ শরিক হন। পরে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত কামরুল বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ফাস্ট ফুড শপ ‘মধুবন’ এ চাকরি করতেন।
জানা যায়, অভাবের সংসারে নিজেদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকত। প্রতিবেশিরা অনেকবার তা সমাধানও করে দিয়েছেন। সম্প্রতি কামরুল প্রবাসে যেতে উদ্যোগী হলে টাকা-পয়সা জোগাড় করা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে ফের বিরোধ বাধে। এরই জের ধরে বুধবার গভীর রাতে আপন ভাইদের সাথে কামরুলের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ছোট ভাই তানভীর আহমদের (১৭) ধারালো দা’র কোপে বড় ভাই কামরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। (খবর সংবাদদাতার)