বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ শিক্ষকদের তালিকা চেয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠি, শিক্ষকদের মধ্যে উৎকন্ঠা। তাহিরপুরে নবজাতীয়করণ শিক্ষকদের যোগ্যতার কাগজ পত্র সংগ্রহ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। উপজেলায় নব জাতীয়করণ করা হয়েছে ৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নবজাতীয়করণ বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন দেড় শতাধিক। তন্মধ্যে দু’চারজন যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ থাকতে পারে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
উপজেলা শিক্ষা অফিস জানায়, নব জাতীয়করণ শিক্ষকদের যোগ্যতা যাচাই করণ সংক্রান্ত একটি পত্র ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় প্রেরণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রেরিত পত্র সুত্রে জানা যায়, নব জাতীয়করণ করার পর অনেক বিদ্যালয় শিক্ষকদের কাক্সিক্ষত যোগ্যতা ছিলো না। পরবর্তীতে শিক্ষক আত্তীকরণের সময় এসব শিক্ষকের তিন বছরের মধ্যে সিইন-এড কোর্স সম্পন্ন করে এইচএসসি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে এসব শিক্ষকের একটি অংশ কাক্সিক্ষত যোগ্যতা অর্জনেও ব্যর্থ হয়। আর ব্যর্থকৃত শিক্ষকদের তালিকা চেয়ে চিঠি প্রেরণের ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অযোগ্য শিক্ষকের তালিকা প্রেরণের নির্দেশ করে অধিদপ্তর।
জানা যায়, ১৯৮৫ সালের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী নারী ও পুরুষদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা ছিল শুধু মাধ্যমিক পাস। ১৯৯১ সালের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয় নারীদের মাধ্যমি এবং পুরুষ উচ্চ মাধ্যমিক। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের পর আবরো যোগ্যতা বাড়ানো হয়। ২০১৩ সালের নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি ও পুরুষদের জন্য স্নাতক করা হয়। তাছাড়া শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ কোর্সও উন্নয়ন করা হয়েছে। সিইন-এড সার্টিফিকেট কোর্সের পরিবর্তে এইচএসসি পাস শিক্ষকদের জন্য রয়েছে ডিপি-এড সার্টিফিকেট কোর্স। বর্তমানে যাদের কোনটিও নেই তাদের চাকুরী থাকবে কিনা এ নিয়ে দেখা দেয়া সংশয়।
তাহিরপুর নব জাতীয়করণ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি আহবায়ক গাজিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নেহার রঞ্জন তালুকদার বলেন, নব জাতীয়করণ শিক্ষকদের কাছ থেকে যোগ্যতা যাচাই বাছাই এর জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র চেয়েছে। অনেকে ইতি মধ্যে কাগজ পত্র জমা দিয়েছে। যোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি এমন শিক্ষক রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলে তা জানা নাই।
তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজয় কুমার দে বলেন, নব জাতীয়করণ শিক্ষকদের মধ্যে যদি কোন কারণে দু’একজন শিক্ষক যোগ্যতা অর্জন না করে থাকেন তাদের যেনো মানবিক কারণে কর্তৃপক্ষ আরও কিছুটা সময় বাড়িয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নব জাতীয়করণ বিদ্যালয়ে জনৈক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, তাহিরপুরে দু একজন শিক্ষক থাকতে পারেন যারা এখনো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন নি।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিপ্লব সরকার বলেন, নবজাতীয়করণ শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের কাগজ পত্র জমা দিচ্ছেন।
আমরা যাচাই বাছাই করে তালিকা প্রেরণ করবো।
তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়ের বলেন, অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা চেয়ে অধিদপ্তর একটি চিঠি প্রেরণ করেছে। এর আলোকে কাগজ পত্র যাচাই বাছাই এর জন্য আমরা নব জাতীয়করণ শিক্ষকদের কাছ থেকে কাগজ পত্র সংগ্রহ করছি। হয়তো এর মধ্যে দু এক জন অযোগ্য শিক্ষক থাকতেও পারেন।