কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সমন্বিত রোডম্যাপ করার তাগিদ দিয়ে বলেছেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আমাদের সুসমন্বিত রোডম্যাপ প্রয়োজন। এই সঙ্কট উত্তরণে ২০৩০ এজেন্ডা, প্যারিস চুক্তি, আদিস আবাবা এ্যাকশন এজেন্ডা আমাদের ব্লু-প্রিন্ট হতে পারে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘকে অবশ্যই অনুঘটকের ভূমিকা রাখতে হবে। মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘের সদর দফতরে ‘ফাইন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট ইন দ্য ইরা অব কোভিড-১৯ এ্যান্ড বিয়োন্ড’ শীর্ষক হাই-লেভেল ইভেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানিয়েছেন।
পূর্বে রেকর্ডকৃত এ ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী সঙ্কট থেকে উত্তরণে ছয় সুনির্দিষ্ট সুপারিশ উপস্থাপন করেন। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রথমত, জি-২০, ওইসিডি কান্ট্রিজ, এমডিবিএস এবং আইএফআইএসের উচিত আর্থিক প্রণোদনা বাড়ানো, অর্থ ছাড় দেয়া এবং ত্রাণের ব্যবস্থা করা। উন্নত অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুত শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ ওডিএ পূরণ করতে হবে।
দ্বিতীয় দফা সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আমাদের বেশি বেসরকারী অর্থ ও বিনিয়োগ আনা প্রয়োজন। ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে আমাদের অবশ্যই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের সুযোগ নিতে হবে। তৃতীয়ত, কোভিড পরবর্তী চাকরির বাজারের সময় এবং অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তার মাধ্যমে আমাদের রেমিটেন্স প্রবাহের নিম্ন প্রবণতা ঠেকিয়ে বিপরীতমুখী করার জন্য আমাদের সঠিক নীতিমালা ও পদক্ষেপ প্রয়োজন। চতুর্থ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত অর্থনীতিগুলোকে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত বাজার এ্যাক্সেস, প্রযুক্তি সহায়তা এবং আরও এক্সেসযোগ্য অর্থায়নের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
পঞ্চম দফা সুপারিশ উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহামারীর কারণে স্বল্পোন্নতের তালিকায় উঠে আসা দেশগুলোর পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে কমপক্ষে ২০৩০ সাল পর্যন্ত নতুন আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বশেষ ষষ্ঠ দফা সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্লাইমেট এ্যাকশন এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে অর্থায়নের জন্য আরও জোর প্রচেষ্টা করা প্রয়োজন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রচ- রকম প্রভাব ফেলে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ১৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করি, যা আমাদের জিডিপির ৪ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশের সমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহামারীর সময় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতা বাড়ানো হয়েছে, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিল্পী ও সাংবাদিকসহ ৩০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। হাই-লেভেল এই ইভেন্টে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থেনিও গুতেরেস ছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জামাইকার প্রধানমন্ত্রী এ্যান্ডু হলনেস প্রমুখ।