শিপন আহমদওসমানীনগর থেকে :
দীর্ঘ ৬ মাস বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে ওসমানীনগর-সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সংযোগ সড়ক গেয়ালাবাজার-জগন্নাথপুর রাস্তার ওসমানীনগর অংশের সংস্কার কাজের। দীর্ঘদিন থেকে খানা খন্দে ভরা এই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি। এলাকার জনসাধারণের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়ার প্রচেষ্টায় এলজিইডির তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষের দিকে সংস্কার কাজ শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই আবার করোনা ভাইরাসের কারণে রাস্তার সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে গেলে প্রকট আকার ধারণ করে জনদুর্ভোগ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলতো দূরের কথা মানুষজন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যাতায়াতের এই দুর্ভোগ লাগবে আবারও এগিয়ে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া। দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ রেখে নানা অযুহাতে দীর্ঘ ছয় মাস অতিবাহিত করার পর চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়াসহ সাধারণ মানুষের দাবির কাছে হার মানতে হয় তাদের। গত ২৬ আগষ্ট জনগুরুত্বপূর্ণ হয় সড়কটির ওসমানীনগর অংশে পুনরায় সংস্কার কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার থেকে জগন্নাথপুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন দুই উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক বাসিন্দা। জগন্নাথপুর উপজেলার অধিকাংশ বাসিন্দারা প্রায় প্রতিদিনই ব্যবসাসহ নানা কাজে ওই সড়ক দিয়েই আসতে হয় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়। সড়কটির এমন বেহাল দশায় তাদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছিলো। ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর সড়কের তেরহাতি, বড় ইসবপুরের বাক, ইসবপুর মাজার গেট, রাজচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, লামা ইসবপুর, খুজগিপুর এলাকাসহ প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কেরই ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙনের সৃষ্টির কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর উপজেলার প্রধান সংযোগ সড়কটির সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগে পড়েন দুই উপজেলার প্রায় আড়াই লক্ষাধিক বাসিন্দা। জনসাধারণের এ দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে আসেন উমরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া। ইউনিয়নের প্রধান এই সড়খটি সংস্কারের জন্য সিলেট বিভাগের এলজিইডি অধিদপ্তর সহ ঢাকাস্থ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বার বার ধর্ণাসহ যোগাযোগ করেন আওয়ামীলীগ দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথেও।
চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার একান্ত প্রচেষ্টায় এলাজিইডির তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষ দিকে সড়কটির ওসমানীনগর অংশ (গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর) পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ৮ কিালোমিটার এলাকার সংস্কার কাজ শুরু করে ছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাশেদুজ্জামান কন্ট্রাকশন। শনিরবাজার থেকে সংস্কার কাজ শুরু হলে কিছু অংশে আরসিসি ঢালাই হয়। পরবর্তীতে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবের অযুহাত দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে চলে যায় সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকে জনদুর্ভোগ। অবশেষে জনসাধারণের দাবির কাছে হার মেনে আবারও গত ২৬ আগষ্ট পুনরায় কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্টরা। আর টি আই প্রজেক্ট এর আওতায় এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে খুব শীঘ্রই সংস্কার কাজ শেষ হবে বলে এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া বলেন, উমরপুর ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার বিহিন থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন দুই উপজেলার বাসিন্দারা। সড়কটি দুই উপজেলার সংযোগ ও এলজিইডির অধিনস্থ থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করার সুযোগ ছিলনা। এরপরও আমি জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা মাথায় রখে নিজ উদ্যোগে সড়কের ভাঙ্গা স্থান গুলিতে ইট ও পাথর দিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই। আমি আশাবাদি দুই উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ লাগবে সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও সুনজর দেবেন।
ওসমানীনগর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী নাজমুল করিম বলেন, গোয়ালাবাজার-জগন্নাথপুর সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করার পর করোনার কারণে কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৬ আগষ্ট থেকে আবারও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। কাজের গুনগত মান ঠিক রাখতে এলজিইডি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।