ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় ॥ বাবার সম্পত্তিতে সমান অধিকার মেয়ের

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারত যখন করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত, এমন এক সময়ে ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। হিন্দু-আনডিভাইডেড ফ্যামিলি প্রপার্টিতে মেয়েদের পক্ষে রায় দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই রায় অনুযায়ী, পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার রয়েছে মেয়েদেরও, এমনই জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছেন।
রায় অনুযায়ী, ২০০৫ সালের আগে অর্থাৎ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগেও যদি কারও বাবা মারা গিয়ে থাকেন, তাহলেও তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন সেই ব্যক্তির মেয়েরা। রায় দেয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেছেন, কন্যা সন্তান চিরকালই প্রিয় কন্যা সন্তান হয়েই থাকেন।
মহিলার জন্ম যবেই হয়ে থাক ২০০৫ সালের সংশোধিত এই আইন অনুযায়ী সমস্ত মহিলার বাবার সম্পত্তি হিন্দু আইন অনুযায়ী অধিকার সমান। মঙ্গলবারের রায়ে একদম স্পষ্ট করেই জানানো হয়েছে, হিন্দু-সাকসেশন অ্যাক্ট সংশোধন হওয়ার পরে মেয়েদের এই আইনি অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। তবে সংশোধনের সময় বাবা বেঁচে থাকলে বা না থাকলেও সকল মেয়েদেরই এই সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগে যাদের বাবা-মা মারা গিয়েছেন, তারাও কি পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবেন, এই নিয়ে একাধিক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৬ সালে প্রকাশ বনাম ফুলবতী মামলা এই আইন কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছিল আদালত।
আবার ২০১৮ সালের অন্য আরেকটি মামলার প্রেক্ষিতে এই আইন কার্যকর হবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কোনও দিশা ছিল না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে , ২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার আছে।
এদিন রায় দিয়ে বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেছেন, একটা মেয়েই সারাজীবন বাবা-মায়ের আদরের মেয়ে হয়ে থাকেন। কিন্তু সম্পত্তির মালিক বেঁচে থাকুক আর না থাকুক, সেই সম্পত্তির উপর মেয়ের সারাজীবন অধিকার থাকবেই। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে যেহেতু শীর্ষ আদালত এই সংক্রান্ত বিভ্রান্তি কাটিয়ে দিল আজকের রায়ের মাধ্যমে, তাই সারা দেশে কন্যা সন্তানের আইনি উত্তরাধিকার সংক্রান্ত যে সমস্ত মামলা রয়েছে, সেগুলির যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।