বর্তমান সরকারের সময় বিনিয়োগের আবশ্যকীয় শর্ত অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ থেমে নেই। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মুজিববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। করোনার কারণে সেটি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি পুনরায় তিনি আহ্বান জানান। বিনিয়োগ পরিবেশ আরও আকর্ষণীয় করার জন্য যথোচিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই বিষয়টির উন্নয়নে সুচিন্তিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
স্মরণযোগ্য, গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রভাবশালী পত্রিকা নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের অবদান বা ভূমিকা তুলে ধরে পত্রিকাটি বলেছিল, দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার চাহিদার বিষয়টি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিবেচনায় রেখে তাদের বিনিয়োগ পলিসি নির্ধারণ করছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বারে অবস্থিত বাংলাদেশ কৌশলগত কারণেই বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের তালিকায় উঠে আসছে। ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটির মানুষের ক্রয়ক্ষমতার পরিধি বাড়ছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে। আগামীতে বাংলাদেশ আরও বেশি পরিমাণে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আহরণ করতে পারবে বলে পত্রিকাটি মন্তব্য করে।
বাংলাদেশ বিদেশী এবং স্থানীয় বিনিয়োগ আহরণের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও সক্ষম হয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। তবে পাশাপাশি এ কথাও বলতে হবে যে, বিদেশী উদ্যোক্তাদের অনেকেই বিশেষ আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এসে নানা হয়রানির শিকার হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাই অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ পরিবেশ কার্যকরভাবে উন্নয়ন ঘটানোর কোন বিকল্প নেই। মনে রাখা দরকার বিদেশী সাহায্য নয়, বিদেশী বিনিয়োগ আমাদের জন্য জরুরী। সেই বিদেশী বিনিয়োগ এমন হতে হবে যা আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে, আমাদের সাধারণ মানুষের জীবন মানোন্নয়নে সহায়ক হবে।