পূর্ব জাফলং বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন ॥ বোমা মেশিন পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান

10

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের গোয়াইনঘাটের পূর্ব জাফলংয়ে বোমা মেশিনসহ পরিবেশ বিধ্বংসী যন্ত্রদানব দিয়ে পাথর-বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা। পাশাপাশি তারা অতীতের ন্যায় সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবিও জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রশাসনের প্রতি এ আহবান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছির হোসাইন বলেন, ‘আমরা শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করি, আমরা বোমা মেশিন, বিলাই মেশিন, শ্যালো মেশিন সহ সকল যন্ত্র দানবের বিপক্ষে। নদী আর প্রকৃতি ধ্বংস হউক এটা আমরা কখনোই চাই নি। রাজনীতি আর অর্থ-বিত্তের ধাপটে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘ দিন থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে, আর স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। লোক মুখে এমনও গুঞ্জন রয়েছে বোমা পরিচালনাকারী চক্রের আদায় করা চাঁদার একটি অংশ প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টরে পৌঁছে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, বলেন, পূর্ব জাফলং অঞ্চলের সিংহভাগ মানুষ শ্রমের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ডাউকি নদী থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলস বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা আয় বঞ্চিত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে লোন নিয়ে নৌকা ত্রয় করে শ্রমিকরা বালু সংগ্রহের কাজ শুরু করে। কিন্তু প্রভাবশালী একটি চক্র নৌকা প্রতি সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হারে চাঁদা আদায় শুরু করে। প্রতিদিন অবৈধভাবে ২০/২৫ লক্ষ টাকা আদায় হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্র। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিশ্বনাথের ফয়জুল, ময়মনসিংহের সুমন ও তাদের সহযোগীরা। এদের রয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ বাহিনী। তারা শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালায়। ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। প্রতিদিন জাফলং অঞ্চলে দু-একটা ঘটনার স্বীকার হয় এলাকার শান্তি প্রিয় গরীব-দুখি মানুষ। ওই চক্রের সাথে আরও রয়েছেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান লুৎফুর রহমান লেবুর ছোট ভাই সামছু।
নাছির হোসাইন বলেন, জাফলং ডাউকি নদী গর্ভে বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে এবং সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের দাবিতে গত ৮ জুলাই জাফলং নদীর তীরে এক মানববন্ধন পালন করে সাধারণ বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২২ জুলাই শ্রমিক আইয়ুব আলী ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় ওই চক্র। তারা পুনরায় বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন শুরু করে। ওই চক্রের সাথে আরও সম্পৃক্ত রয়েছে কুরবান আলীর ছেলে ইব্রাহিম, আবুল কাশেমের ছেলে জাকির, আইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, সমেদ মিয়া, শাহিন মিয়া, জাকির হোসেন, ইউনুছ মিয়া, জামাল, কামাল, সুমন, আলাউদ্দিন, মাইনুদ্দিন, শাহাদত, শাহিন, বাংলাবাজার এলাকার এনায়েত হোসেন লেবু আনোয়ার হোসেন, খান বাহাদুর প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে নাছির উদ্দিন সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করে শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ দান এবং বোমা মেশিন পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে জোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইয়ুব আলী, আতাউর রহমান, আব্দুল কাদির, সিরাজ উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, শহর আলী, আক্কাস আলী, সিদ্দিক মিয়া, তোতা মিয়া প্রমুখ।