বাংলাদেশকে ১০টি রেল ইঞ্জিন উপহার ভারতের

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশকে ১০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) উপহার দিয়েছে ভারত সরকার।
সোমবার ভার্চুয়াল আয়োজনে দুই দেশের পররাষ্ট্র ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রেল ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়।
নয়াদিল্লীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সবুজ পতাকা নাড়িয়ে লোকোটিভগুলোর বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রার সূচনা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং রেল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।
বাংলাদেশ প্রান্তে ঢাকায় রেল ভবন থেকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ভার্চুয়াল আয়োজনে তা গ্রহণ করেন।
এরপর বিকালে ভারতের গেদে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ওই রেল ইঞ্জিনগুলো দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশনে গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন জানিয়েছে, ভারত সরকারের অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে এই লোকোমোটিভগুলো। এর মাধ্যমে ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ প্রতিশ্রুতি পূরণ হল।
লোকোমোটিভ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জয়শঙ্কর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়’ রচনা চলমান রয়েছে।
”বিশ্বের খুব কম দেশের মধ্যেই আমাদের মতো ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অংশীদারিত্ব আজ এই অঞ্চলে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আদর্শ হিসেবে বিবেচিত।”
দুই দেশের পর্যটন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা, শক্তি, সংস্কৃতি এবং পরমাণু বিজ্ঞানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, মহাকাশ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং মানুষে মানুষে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আপনাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী হিসেবে, আমরা আপনাদের প্রবৃদ্ধিতে আনন্দিত।
”বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে অবিশ্বাস্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং সকল আর্থ-সামাজিক সূচকে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।”
বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রমাগত বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩% বেশি।
”আমি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে ভারতের সাথে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ইস্পাত কঠিন এবং পারস্পরিক মূল্যাবোধ, নীতি এবং আস্থার উপর নির্মিত। রাজনীতি, সংস্কৃতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পানি, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, পরিবহন, লজিস্টিকস, নিরাপত্তাসহ প্রায় সর্বক্ষেত্রে তা বিস্তৃত। আমার আশা, ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।”
সব ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, যোগাযোগ মানে উৎপাদনশীলতা এবং আমাদের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সড়ক, রেল ও নৌ পথের পাশাপাশি অন্তরের সংযোগ তৈরির চেষ্টা করছেন।”
করোনাভাইরাস মহামারির এই সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সচল রাখার ক্ষেত্রে রেলপথকে বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ভারতীয় হাই কমিশন জানিয়েছে, জুন মাসে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মালবাহী ট্রেন চলাচল করেছিল। প্রয়োজনীয় পণ্য এবং কাঁচামাল বহনের জন্য মোট ১০৩টি মালবাহী ট্রেন ব্যবহৃত হয় ওই মাসে।
সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্সেল ট্রেনের সঙ্গে কনটেইনার ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে।