দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সুরমাসহ সকল নদী-নালা, হাওর, খাল-বিলের কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ বাড়ছে চরমে। গত রবিবার থেকে তেমন বৃষ্টিপাত না হলেও মঙ্গল ও বুধবার রাতভর মুষলধারে আবারও বর্ষণ শুরু হয়। কিন্তু ভাটিতে পানির টান না থাকায় নিম্নাঞ্চলের পানি এখনও স্থিতিশীল রয়েছে।
উপজেলা সদরের সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের সংযোগ সড়কগুলোর অবস্থা এমনিতেই ছিল নাজুক, তার উপর লাগাতার ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রথম দফা বন্যার পানি না নামতেই সপ্তাহকালের ব্যবধানে ফের বন্যায় যেন ‘মরার উপর খরার ঘা’। এ ছাড়াও অপ্রতুল ত্রাণ, বিশৃদ্ধ পানীয় জলসহ মানুষ ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকটে বানভাসিরা পড়েছেন বিপাকে।
এ দিকে উপর্যুপরি দু’দফা বন্যায় খামারিদের মাছের ঘের ভেসে যাওয়াসহ উঠতি আউশ, ইরি বোরো, রোপা আমনের বীজতলা ও সবজি খেত বিনষ্ট হওয়াতে চরম বিপাকে পড়েছেন উপজেলাবাসী। রোপা আমনসহ আগামি অগ্রহায়ণী মৌসুমী ফসল উৎপাদন অনেকটাই অনিশ্চিত হওয়ার আশংকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার কৃষিজীবী পরিবার। তাই অচিরেই দোয়ারাবাজার উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার মাধ্যমে বন্যা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিনা সুদে কৃষিঋণ, কৃষি উপকরণসহ বিনামূল্যে ধানের বীজ ও চারা বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছেন দোয়ারাবাজারবাসী।
এদিকে দোয়ারাবাজার-বগুলাবাজার সড়কের ভাঙনের ফলে লক্ষ্মীপুর, সুরমা ও বাংলাবাজার (আংশিক) ইউনিয়নের অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। দোয়ারাবাজার-বালাবাজার, দোয়ারাবাজার-নরসিংপুর ভায়া ব্রিটিশ-বালিউরা, নরসিংপুর-চাইরগাঁও (ক্যাম্পেরবাজার) সড়কেরও একই দশা। ফলে নরসিংপুর, বাংলাবাজার ও দোয়ারা সদর (আংশিক) ইউনিয়নবাসীও চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। এমনিতে প্রয়োজনীয় লোকবল ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ পথচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারা বছরজুড়েই চলাচল করতে হয় এসব ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে।