সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় জনদুর্ভোগ চরমে

17
সুনামগঞ্জে বন্যা কবলিত একটি গ্রাম।

আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
২য় দফায় ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে। ইতিমধ্যে জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের ২৫টি আবাসিক এলাকা এবং সদর উপজেলার মইনপুর, ইব্রাহিমপুর, সদরগড় ও অচিন্তপুরসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম, হাটবাজার ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে ৪ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী রঙ্গারচর, সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের প্রধান সড়ক ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ৩ দিনে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও শুরু হয়েছে প্রবল পাহাড়ী ঢল। একদিকে বজ্রপাতসহ শিলাবৃষ্টি অন্যদিকে প্রবল পাহাড়ী ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীতে ৬০ সেন্টিমিটারের উপরে পানি বেড়েছে। এই সময়ে জেলা সদরে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২৫ থেকে ২৯ জুন সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত আবারও লাগাতার পাহাড়ী ঢল, বৃষ্টি বন্যায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজ ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আশ্রয় কেন্দ্রে উপদ্রুতরা ইতিমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। পৌর এলাকায় আরো ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আরিফ আদনান বলেন, উপজেলার ১৯টি হাইস্কুল ও ১২৯টি প্রাইমারী স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১১ উপজেলা ও ৪ পৌরসভায় ৪২ হাজার ৫৭টি পরিবার বন্যায় এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮১টি ইউনিয়নে ২৮০ মে: টন চাল ও ১৬ লাখ টাকা, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সবিবুর রহমান বলেন, সীমান্ত সংলগ্ন চেরাপুঞ্জিতে গত ৪৮ ঘন্টায় ৫২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জে সুরমার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। সবাইকে সর্তক থাকার আহবান জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, জেলার ১১টি উপজেলায় বন্যা তথ্যকেন্দ্র ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাধিক পরিবার।