দেশে করোনা আক্রান্ত ১ লাখ ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে, মোট মৃত্যু ২০৯৬

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪৪ জনের মৃত্যু এবং নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৩২০১ জন। এ নিয়ে এই পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২০৯৬ জনে এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৩৫২৪ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৭৬ হাজার ১৪৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ২৪৫টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৩৬০টি। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। সোমবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৪ জনের মধ্যে ৩৩ পুরুষ ও ১১ জন নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৬৫৭ জন, যা শতকরা ৭৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং নারী ৪৩৯ জন, যা শতকরা ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। অঞ্চল বিবেচনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, বরিশাল বিভাগে চারজন, রাজশাহী বিভাগে তিনজন, খুলনা বিভাগে দুজন, সিলেটে তিনজন, রংপুরে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুজন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৫ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন নয়জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৭৭ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৭৯৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৯৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৫৫ জন। এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশন করা হয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৭০ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৮৩৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৬৯ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ৮০১ জন।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯ প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ১ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মৃতের হার দশমিক ৮২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সীদের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬১ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে ১৬টি এবং মহানগরীর বাইরে ঢাকা জেলায় একটি। ঢাকা মহানগরে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৭৭৩ এবং আইসিইউ বেড রয়েছে ১৮০টি। রোগী ভর্তি রয়েছেন দুই হাজার ৩৭৫ জন এবং আইসিইউতে রোগী রয়েছেন ৯৭ জন। সব বিভাগ মিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬১০টি এবং আইসিইউ রয়েছে ৩৭৯টি। সব বিভাগে রোগী ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৬৯১ জন, আর আইসিইউতে রয়েছেন ১৮৩ জন। সব হাসপাতালেই রোগী ভর্তি হতে পারবেন কারণ অনেক শয্যা খালি রয়েছে। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে মোট ১০ হাজার ২৪০টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা ৮০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৫টি।