জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে ফের গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দুই মাস আট দিন পর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আতঙ্কের মধ্যেই সোমবার সকাল ৬টা থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিবহন শ্রমিক নেতারা আসন প্রতি ৬০ শতাংশ ভাড়া বেশি নেওয়ার দাবি করলেও যাত্রীদের অভিযোগ দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, স্বাস্থ্য বিধি না মানার পাশাপাশি অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে চলাচল করছে গণপরিবহন। হাতে গোনা কয়েকটি বাস ছাড়া বেশিরভাগ ইমা, লেগুনা, সুজকী, হিউম্যান হুলার ও টেম্পুতে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বহন করা হচ্ছে যাত্রী। সরকার ঘোষিত নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছা মাফিক পূর্বের ন্যায় ১৪জন বা তার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়। আবার তুলনামূলক যানবাহন কম থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এ সুযোগে দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকছেন ইমা, লেগুনা, সুজকী, হিউম্যান হুলার চালকরা। স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে সোমবার থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো নজরদারি দেখা যায়নি।
সলিম উদ্দিন নামের এক যাত্রী জানান, তিনি সিলেটের ধোপাদীঘির পার থেকে লেগুনা করে জৈন্তাপুরে আসেন। তখন থাকে বাধ্য হয়ে গাদাগাদি করে আসতে হয়েছে তাদেরকে। গাড়ী চালক ও হেলপার নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে পূর্বের ভাড়ার প্রায় দিগুণ ভাড়া আদায় করছে এবং গাদা-গাদি করে যাত্রী উঠা নামা করছে। যেখানে সরকারি নির্দেশনা গুলো মানা হয়নি। রাস্থায় নজরদারীর জন্য সরকার ঘোষিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন চেক পোষ্টের দেখা মিলেনি। এই সুবাধে একশ্রেণীর অর্থলোভীরা, লাইসেন্স-ফিটনেস বিহীন লক্কর ঝক্কর ইমা, লেগুনা, সুজকী, হিউম্যান হুলার এবং সিএনজি চালিত ও নাম্বার বিহিন অটোরিক্সা গুলোর মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন করছে। এছাড়া গাড়ী চালক ও হেলপাররা মানছেন না স্বাস্থ্যবিধির ঘোষিত নির্দেশনা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো দূরের কথা মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই গ্লাভস, গাড়ীর সিট গুলো রয়েছে অপরিচ্ছন্ন। ইতোমধ্যে সিলেটের পর্যটন খ্যাত জৈন্তাপুর উপজেলায় দ্রুত কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসটি হু হু করেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বণিক প্রতিবেদকে জানান, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে আমাদের চেক পোষ্ট রয়েছে, পরিবহন শ্রমিকরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাঝে মধ্যে যাত্রী পরিবহন করছে। আমাদের নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, করোনা বিশ্বে মহামারী আকার ধারণ করেছে। ১৮ কোটি বেশির জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশও চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া কোনো গাড়ি চলবে না। সরকার যে আইন করেছেন সব আমাদের উপকারের জন্য। তাই আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।