আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
সরকারী খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি পঞ্চরত্ন বাউলের দেশ সুনামগঞ্জের বাউল শিল্পীরা। অথচ শ্রমিক, চালক, ফেরিওয়ালা ভবঘুরে, ভিক্ষুক, চায়ের দোকানদার ইত্যাদি ১৬টি ক্যাটাগরীতে ওয়ার্ডভিত্তিক অগ্রাধিকার তালিকায় খাদ্য সহায়তা পেয়েছে জেলার এক লক্ষাধিক পরিবার। কিন্তু কোন তালিকাতেই গ্রামগঞ্জের বাউল শিল্পীদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়নি।
এমতাবস্থায় জেলার ৪ পৌরসভা ও ৮৮ ইউনিয়নের সকল গ্রামাঞ্চলের বঞ্চিত বাউল শিল্পীদেরকে জরুরী ভিত্তিতে খুঁজে খুঁজে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য দাবী জানিয়েছেন বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের সহ-সভাপতি বাউল সাহেব উদ্দিন। বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের পুত্র গীতিকার শাহ নূরজালাল বাবুল বলেন, বর্তমানে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি থেকে উপেক্ষিত আমরা সংগীত জগতের সাথে জড়িতরা সবচাইতে বেশী অসহায়। আমাদের কথা কেউ ভাবছে না। আমার তাড়ল ইউনিয়নে এ পর্যন্ত ৫ বার তালিকা প্রণয়ন করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। আড়াই হাজার করে নগদ টাকাও দেয়া হবে। কিন্তু কোনবারই তালিকায় আমাদের বাউল শিল্পীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
জ্ঞানের সাগর দুর্বিণ শাহ এর পুত্র গীতিকার কবি আলম শাহ ফকির বলেন, আমরা ছাতক উপজেলায়ও কোন বাউল শিল্পীরা খাদ্য সহায়তা পাইনি। ফলে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত আমাদের শিল্পীসমাজ অবর্ণনীয় মানবেতর দিন কাটাচ্ছি। তিনি করোনা সংক্রমণের ফলে দুর্দশাগ্রস্ত বাউল শিল্পী বিশেষ করে গীতিকার সুরকার কবি সাহিত্যিক কীর্তূনীয়া, যাত্রা, নাটক, যন্ত্রশিল্পী, পীর ফকিরসহ সকল শ্রেণিপেশার সংগীত সাধকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকার ও বিত্তবানদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামছুল আবেদীন ও জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাউলরা আমাদের লোক সংস্কৃতির মূল শেঁকড়। অনেক বাউলদের একমাত্র পেশা গান গেয়ে রোজগার করে সংসার চালানো। করোনার কারণে বাউলরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বাউলদের সম্মানের সাথে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, সরকারের দেয়া গাইডলাইন অনুযায়ী ১৬টি ক্যাটাগরীতে জেলা প্রশাসন খাদ্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনসহ বঞ্চিতদেরকেও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। ভবিষ্যতে বাউল শিল্পীসহ ক্যাটাগরীর পাশাপাশি বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টাও আমাদের রয়েছে।