কাজিরবাজার ডেস্ক :
নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা ছাড়ের জিও জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। আজ মঙ্গলবার যে কোন সময় শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়াসহ বেতন-ভাতার চেক ব্যাংকে জমা দেয়া হচ্ছে। যারা এখন টাকা পেতে যাচ্ছেন তারা বকেয়া দুটি ঈদ বোনাস, বৈশাখী ভাতা ও গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বেতন একসঙ্গে পাচ্ছেন।
জানা গেছে, সোমবার জিও জারির পরই সে অনুসারে কাজ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। আবেদনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে নীতিমালা অনুসারে যোগ্য বলে বিবেচিত তিন হাজার ৬ শতাধিক শিক্ষক ঈদের আগেই বেতন-ভাতা পবেন বলে জানিয়েছে মাউশি। মাউশির উপ-পরিচালক রুহুল মোমেন সোমবার জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি শিক্ষক-কর্মচারীরা যেন ঈদের আগে টাকা তুলতে পারেন। তাই জিও জারির আগেই আমরা অনেক কাজ গুছিয়ে রেখেছি।
এ কর্মকর্তা জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। যোগ্য বলে বিবেচিতরাই এবার টাকা পাচ্ছেন। অনেকে আবেদন করতে পারেননি। তাদের জন্য ইতোমধ্যেই আবার আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাদের আবেদনের পর আবার যাচাই-বাছাই করে তাদের প্রাপ্য টাকা দেয়া হবে।
জানা গেছে, শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০১৯ সালের জুলাই থেকে বেতন পাবেন। গত আগস্টে অনুষ্ঠিত ঈদ-উল-আযহা আর আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিতব্য ঈদ-উল-ফিতরের ঈদ বোনাস পাচ্ছেন। গত এপ্রিল মাসে দেয়া বৈশাখী ভাতার টাকা বাবদ পাবেন। প্রতিটি খাতের টাকা ছাড়ের জন্য আলাদা আলাদাভাবে চারটি আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এদিকে গত ১৬ মে নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের তিন হাজার ৬২৬ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত ও স্তর পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে স্কুলের দুই হাজার ১৬৮ জন এবং কলেজের এক হাজার ৪৫৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
২৯ এপ্রিল নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্র্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এক হাজার ৬৫১টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্তভাবে এক হাজার ৬৩৩টি তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এমপিওভুক্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৯১টি মাধ্যমিক স্কুল, ৪৩০টি নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, ৬৮টি স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ৯২টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং ৫২টি ডিগ্রী কলেজ রয়েছে।
এদিকে নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের যারা নির্ধারিত সময়ে এমপিওভুক্তির আবেদন করতে পারেননি, তাদের ফের এমপিওর আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। আগামী ২২ মে থেকে বাদপড়া স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আবেদন আবারও গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ইএমআইএস সেলের সার্ভার জটিলতার কারণে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির আবেদন করতে পারেননি। সারাদেশ থেকে শিক্ষকরা বলছেন সার্ভার অচল, ডাউন থাকা এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার জন্য আবেদন করা যাচ্ছিল না। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের। যে কোন সমস্যার জন্য হটলাইনে দেয়া নম্বরগুলোর বেশিরভাগ কলই কেউ রিসিভ করছেন না।
বিশ থেকে ত্রিশ বার কল করার পর রিসিভ করে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন কেউ কেউ। দ্বিতীয় দফায় আবেদন গ্রহণে যাতে এরকম জটিলতা না হয় সে বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শিক্ষকরা। তাই, আবার সেই শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তথ্য নিবন্ধনের নির্দেশ : প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলতি বছরের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির তথ্য এন্ট্রি, শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত পদয়ন (অধিক্ষেত্র অনুযায়ী) কার্যক্রম সম্পন্নকরণ এবং নতুন নিয়োপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রফাইল নিবন্ধন সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
আগামী ৩০ মের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ। অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এ নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়।
বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারি শুরু জুনে : চলতি বছরের জুনে শুরু হতে যাচ্ছে বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারি ২০২০। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ শুমারির তথ্য সংগ্রহের কাজ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করবেন। এ তথ্য অনলাইন এপিএসসি সফটওয়্যারে এন্ট্রি করতে সকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।