সংক্রমণ ঠেকাতে হবে

17

যত দিন যাচ্ছে, পরীক্ষা বাড়ছে, তত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। একই সঙ্গে ‘অঘোষিত লকডাউন’ তুলে দেওয়ার কথা উঠতে শুরু করেছে নানা মহল থেকে। এরই মধ্যে এই ‘অঘোষিত লকডাউন’ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। আগামী ১০ তারিখ থেকে সীমিত আকারে খুলছে শপিং মল। খুলে দেওয়া হয়েছে গার্মেন্ট কারখানা। পরিবহন শ্রমিকরা পথে নেমে বিক্ষোভ করেছে। সব মিলিয়ে মনে করা যেতে পারে, যেকোনো কারণেই হোক মানুষকে ঘরে রাখার কৌশল খুব একটা কাজে আসছে না। গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাস সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও সাংবাদিকদের বলেছেন, দোকানপাট ও মার্কেট খুললে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়বে। যেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে, সেখানে শপিং মল ও মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। উপসর্গ ছাড়াই অনেকের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ছে, সে ক্ষেত্রে ক্রেতারাও যে করোনাভাইরাস বহন করছে না তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। রাজধানী ঢাকায় লকডাউন ভেঙে অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার চলাচল বেড়েছে। রিকশার চলাচল আগে থেকেই বেড়েছে। দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেওয়া হলে ক্রেতাদের যাতায়াতের জন্য অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহনের চলাচল বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাতেও সামাজিক দূরত্ব না মানার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এতে নতুন এক অগোছালো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
ওদিকে দেরিতে হলেও পরীক্ষায় অগোছালো পরিস্থিতি কাটিয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় আগ্রহী মানুষের বিড়ম্বনা কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত মান সংরক্ষণেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আইইডিসিআরের পর আরো সময়ের প্রয়োজনে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। সামনে এ পরীক্ষার সুযোগ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান পাবে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ঢাকাসহ পুরো দেশে এই নমুনা সংগ্রহের কাজ চলবে। মানুষ প্রয়োজনমতো নিজ নিজ এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানে বুথে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসতে পারবে। এ ছাড়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উদ্যোগে দেশেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী আলোচিত এবোলার ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদন শুরু হয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুসারে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় ছয়টি জেনেরিকের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ উৎপাদনে দেশের যে ছয়টি কম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে রাখতে হবে। বাড়াতে হবে পরীক্ষা। আর ওষুধ পাওয়া গেলে সংক্রমণ ঠেকানো সহজ হবে বলে আমরা মনে করি।