কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৭০টি কলকারখানা শ্রমিকদের বেতন দেয়নি বলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় এই কারখানাগুলোর একটি তালিকা শ্রম সচিবকে পাঠিয়েছেন বলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে আইনের বাইরে এক সপ্তাহের বেশি সময়ে পেয়েও শিল্প শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যর্থ কারখানাগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন স্থগিত করা হতে পারে।
শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধে ব্যর্থ কলকারখানাসমূহের তালিকা সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে যে সমস্ত কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের স্ব স্ব মালিকগণ শ্রমিকদের মজুরি ও বেতনভাতা পরিশোধে ব্যর্থ হবেন সেই সমস্ত কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার জন্য সকল উপমহাপরিদর্শকগণকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল।
তালিকায় ঢাকা জেলা থেকে ১২২টি, গাজীপুর থেকে ১২০টি, নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩০টি, চট্টগ্রাম থেকে ৫৮টি, পাবনা থেকে ৩টি, নরসিংদী থেকে ৬টি, ময়মনসিংহ থেকে ১১টি, মুন্সিগঞ্জ থেকে ১টি কারখানা মজুরি দেয়নি। এছাড়াও দিনাজপুর জেলা থেকে ৩টি, রংপুর থেকে ২টি, কুমিল্লা থেকে ৫টি, ফরিদপুর থেকে ৪টি, রাজশাহী থেকে ২টি, খুলনা থেকে ৩টিসহ মোট ৩৭০টি কলকারখানার মালিকরা শ্রমিকদের মজুরি ও বেতনভাতা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এসব কলকারখানাসমূহের মালিকদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে কারখানা ‘বন্ধ ও খোলার’ মধ্যে সব শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যেই পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি সম্প্রতি নির্দেশ দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
ওই সময় তিনি বলেন, এ নির্দেশ না মানলে বা উক্ত তারিখের মধ্যে বেতন প্রদানে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এরপর ১৪ এপ্রিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সকল উপপরিদর্শকদের কাছে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যর্থ কলকারখানাসমূহের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে অত্র কার্যালয়ে দাখিল করতে হবে।
‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী মালিকগণের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আগত অর্থবছরে মজুরি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তালিকাভুক্ত কলকারখানার লাইসেন্স নবায়ন স্থগিত করতে হবে।’