কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনাভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ ও সব ধরনের সমাবেশ স্থগিত করেছে সরকার। সীমিত করা হয়েছে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের কর্মসূচীও। এদিকে স্থগিত করা হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের জাতীয় পর্যায়ের খেলা। স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও প্রাত্যহিক সমাবেশ শ্রেণী কক্ষে আয়োজনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজন আপাতত বন্ধ রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মুজিববর্ষের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান সীমিত করে সংশোধিত জাতীয় কর্মসূচীর অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই কর্মসূচী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর পর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে। সংশোধিত কর্মসূচীর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনগণকে সচেতন এবং ব্যাপক জনসমাগম নিরুৎসাহিত করার অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন সীমিত করে সংশোধিত কর্মসূচী অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
চিঠিতে বলা হয়, সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের বিস্তার এবং সম্প্রতি বাংলাদেশেও তিনজন রোগী শনাক্ত হওয়ায় সরকার জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি গণপরিবহনে চলাচলে সতর্কতা ও ব্যাপক জনসমাগম নিরুৎসাহিত করছে। এর অংশ হিসেবে কর্মসূচী অনুমোদিত হয়েছে। অনুমোদিত কর্মসূচীর মধ্যে ২৫ ও ২৬ মার্চ তারিখে জাতির উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী সংবলিত ক্রোড়পত্র পত্রিকায় প্রকাশ। সারাদেশে ২৫ মার্চের রাতে নিহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা। সারাদেশে প্রতীকী ব্ল্যাক-আউট, ১ মিনিটের জন্য (কেপিআই/জরুরী স্থাপনা/চলমান যানবাহন ব্যতীত)।
এছাড়া সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সীমিত সংখ্যক আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সীমিত আকারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা যাবে।
সব সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন (ওইদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে)। এমনকি ২৬ মার্চ সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় সীমিত উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। তবে কুচকাওয়াজ ও সমাবেশ স্থগিত থাকবে।
২৬ মার্চ রাতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারী ভবন/স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলায় ৩১ বার তোপধ্বনির আয়োজন থাকবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা, সাংস্কৃতিক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং বিদেশী পত্র-পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র (ইংরেজিসহ) প্রকাশও কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারী বেতার/টিভি চ্যানেলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসভিত্তিক অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ, সাহিত্য সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র/পোস্টার প্রকাশ করতে পারবে। জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগনিত কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন, দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন হবে।