বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
চিকিৎসক সংকট তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ১৩ জনের স্থলে সেবা দিচ্ছেন ৫ জন চিকিৎসক। ৩ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর সেবা দিতে গিয়ে ৫ জন চিকিৎসক হিমশিম খাচ্ছেন। সে কথাই জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকবৃন্দ।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স টি শুরু থেকেই ৩০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছিল। গত ২৫ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখ হতে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। উন্নীত হওয়ার পূর্বে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কখনো ২ জন, কখনো ৩ জন চিকিৎসকের উপস্থিতি ছিল। উন্নীত হওয়ার পর ৩৯ তম বিসিএসএ ৬ জন চিকিৎসক একসাথে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ দেয়ার পর পর্যায়ক্রমে ৩ জন চিকিৎসক অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান এবং ৩ জন এখনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নতুন নিয়োগকৃত ৩ জন, পূর্বের ১জন ও ডিজির আদেশক্রমে ১জন সহ মোট ৫ জন চিকিৎসক উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা থাকলেও তিনি মাসের অধিকাংশ সময় অফিসিয়াল কাজকর্ম, মিটিং, সেমিনার নিয়ে ব্যস্ত থাকছেন।
সরজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ভিবিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ। সে সময কথা হয় ৩৯তম বিসিএসএ তাহিরপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানকৃত ডাক্তার নিলুফার ইয়াসমিনের সাথে। তিনি জানান, ৬ জন ডাক্তার একসাথে যোগদান করেছিলাম। ৩ জন অন্যত্র বদলি হয়ে চলে গেছেন। আমরা যারা উপস্থিত রয়েছি সবাই চেষ্টা করছি সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিতে। অন্য এক প্রশ্নে আপনিও তাদের মত অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, সব জায়গাতেই তো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে, তাহিরপুর থাকি বা অন্যত্র যাই।
উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের বড়দল গ্রাম থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা জাবেদা বেগম (৫৬)। সে সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান হাসপাতালে মহিলা ডাক্তার থাকায় আমরা মন খোলে রোগের কথা বলতে পারছি। তিনি আরও জানান প্রতিটি হাসপাতালে দু’একজন মহিলা ডাক্তার থাকা খুবই দরকার।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন জানান, কিছুদিন পূর্বেও অনেক চিকিৎসক ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ৩ জন চিকিৎসক অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিশশিম খাচ্ছেন অবশিষ্ট চিকিৎসক গণ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সুমন বর্মন বলেন, ১৩ জন চিকিৎসকের স্থলে ৫ জন চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেহেতু চাপটা একটু বেশীই। তবু আমরা চেষ্টা করছি সবার চিকিৎসা সেবা দিতে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার থাকাতে চান না। নতুন নিয়োগ দিলেও তারা যোগদানের দিন থেকে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা যারা এখানে আছি প্রত্যেকেই চেষ্টা করছি আমাদের সেবাটুকু দেয়ার।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে ৮টি পদই শূন্য রয়েছে। শূন্য পদগুলো হলো আবাসিক মেডিকেল অফিসার ১জন, ডেন্টাল ১ জন, কনসালট্যান্ট ৪ জন (সার্জারী, মেডিসিন, গাইনী, এ্যনেস্থেশিয়া)ও ইউনিয়ন মেডিকেল অফিসার ২ জনের পদ শূন্য রয়েছে।