স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রথম ম্যাচে ১৬৯ রানে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত লড়াই করল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের দেয়া ৩২৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে তারা তুলল ৩১৮ রান। ৪ রানের জয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল টাইগাররা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচ ৬ মার্চ।
মঙ্গলবার সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। অনেকেই হয়তো ভেবে নিয়েছিলেন আর অল্প কিছু রান করে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যাবে। কিন্তু সফরকারী দলের দুই টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানরা ঝড় তুলে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৮০ রানের পার্টনারশিপ করেন মুতোমবোদজি-তিরিপানো।
শেষ ৩০ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ৭৭ রান। তাদের হাতে ছিল ৩ উইকেট। আল-আমিনের করা ৪৬তম ওভার থেকে তিরিপানো-মুতোমবোদজি মিলে ১৬ রান নেন। শফিউলের করা ৪৭তম ওভার থেকে তারা নেন ২০ রান। ৪৮তম ওভারে আল-আমিন এসে দেন ৭ রান। ৪৯তম ওভারে শফিউল দেন ১৪ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। এই ওভারে আল-আমিন ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।
ম্যাচটিতে জিম্বাবুয়ের চারজন ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৬৬ রান করেন সিকান্দার রাজা। মাধিভেরের ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। ৫১ রান করেন ওপেনার কামুনহুকামউই। ৯ নম্বর পজিশনে নেমে ২৬ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৫৫ করে অপরাজিত থাকেন ডোনাল্ড তিরিপানো। ২১ বলে ৩৪ করেন মুতোমবোদজি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৩টি উইকেট নেন। অন্যদের মধ্যে মাশরাফি বিন মর্তুজা ১টি, শফিউল ইসলাম ১টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি ও আল-আমিন হোসেন ১টি করে উইকেট নেন।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২২ রান করে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের পক্ষে ১৩৬ বলে ২০টি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে ১৫৮ রান করেন তামিম। এর আগে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২০০৯ সালে বুলাওয়েতে ১৫৪ রান করেছিলেন তামিম। সেদিন থেকেই তামিমের এই স্কোরটি ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের স্কোর। মঙ্গলবার তামিম ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে নিজের সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছেন। ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের দিক থেকে সেরা দশটি ইনিংসের মধ্যে তামিমেরই আছে ৬টি।
এদিন তামিম ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকেন। ৪২ বলে পূরণ করেন ব্যক্তিগত অর্ধশত। ১০৬ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। সেঞ্চুরি করার পর তিনি যেন আরো ভয়ানক হয়ে ওঠেন। ১৩২ বলে তামিম ১৫০ রান পূরণ করেন।
ব্যক্তিগত ১৫০ রান করার পর ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে লং-লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের রেকর্ড ভাঙেন তামিম। এই ওভারের চতুর্থ বলে লং-অফে মুতোমবোদজির হাতে ক্যাচ হন তিনি। ওয়ানডেতে ২৩ ইনিংস পর সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। ওয়ানডেতে তামিমের এখন মোট সেঞ্চুরি ১২টি।
তামিম ছাড়াও ভালো খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ৫৫ রান করে আউট হন তিনি। ১৮ বলে ৩২ করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ মিথুন। মাহমুদউল্লাহ ৪১ করে আউট হয়ে যান। জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে মুম্বা ২টি, টিশুমা ১টি, তিরিপানো ২টি ও মাধিভেরে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৪ রানে জয়ী বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইনিংস: ৩২২/৮ (৫০ ওভার)
(তামিম ১৫৮, লিটন ৯, শান্ত ৬, মুশফিক ৫৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, মিথুন ৩২*, মিরাজ ৫, মাশরাফি ১, তাইজুল ০, শফিউল ৫*; মুম্বা ২/৬৪, টিশুমা ১/৩৫, তিরিপানো ২/৫৫, মাধিভেরে ১/৩৮, সিকান্দার ০/৫৯, উইলিয়ামস ০/৩৫, মুতোমবোদজি ০/৩৪)।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ৩১৮/৮ (৫০ ওভার)
(কামুনহুকামউই ৫১, চাকাভা ২, ব্রেন্ডন টেইলর ১১, উইলিয়ামস ১৪, মাধিভেরে ৫২, সিকান্দার ৬৬, মুতুম্বামি ১৯, মুতোমবোদজি ৩৪, তিরিপানো ৫৫*, মুম্বা ০*; মাশরাফি ১/৫২, শফিউল ১/৭৬, মিরাজ ১/২৫, আল-আমিন হোসেন ১/৮৫, তাইজুল ৩/৫২, মাহমুদউল্লাহ ০/২২)।
ম্যাচ সেরা: তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)।