বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এর কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে আদর্শবিরোধী, নীতিহীন, অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে দলের অভ্যন্তরে গুরুবাদী চর্চা, যৌথজীবনকে এড়িয়ে যাওয়া, অগণতান্ত্রিক আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দল পরিচালনা, ভিন্নমত দমনে নানা চক্রান্ত, গ্র“পিংজম ও শ্রেণী আন্দোলন-গণআন্দোলনকে এড়িয়ে নিরাপদ গন্ডিবদ্ধ রাজনীতির বিরুদ্ধে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলো। এই সামগ্রিক সংকট পর্যালোচনা করে দলের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বাসদ (মার্কসবাদী) দলকে একটি র্যাডিকাল পেটিবুর্জোয়া দল হিসাবে চিহ্নিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন ৮০ সাল থেকে দলের অসংখ্য নেতাকর্মী একটি বিপ্লবী আকাঙ্খা নিয়ে শুরু করলেও সঠিক বিপ্লবী সংগ্রামের অনুপস্থিতির কারণে বিপ্লবী দল হিসাবে গড়ে উঠতে পারেনি। এর প্রেক্ষিতে দলের কেন্দ্রীয় নির্ধারিত ফেরামের ১৬ জন সদস্য বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে অতীত দিনের ভুলের পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে নতুন পার্টি প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানান। যা সামগ্রিক বাস্তবতায় অত্যন্ত যৌক্তিক। কিন্তু কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটি এ মতামতকে দলবিরোধী তৎপরতা হিসেবে চিহ্নিত করে এবং দলের অভ্যন্তরে মতাদর্শিক সংগ্রাম পরিচালনার সকল পথ বন্ধ করে স্বৈরতান্ত্রিকভাবে এই ১৬ জন নেতাকে বহিষ্কার করে।
এর প্রতিবাদে বাসদ(মার্কসবাদী) সিলেট জেলা কমিটির নেতা সুশান্ত সিনহা সুমন, হৃদেশ মুদি ও মহিতোষ দেব মলয় এক যুক্ত বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তীকে শোকজ এবং কেন্দ্রীয় নির্ধারিত ফোরামের ১৬ জন নেতার বহিষ্কারাদেশের তীব্র নিন্দা জানান। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আজ যখন শ্রমজীবী-সাধারণ মানুষ তীব্র শোষণ-লুটপাটে জর্জরিত, আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সংগ্রাম গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। এসব ব্যর্থতার মূল্যায়ন না করে দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের একক ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত মাফিক দল পরিচালনা, ঘোষিত নীতির পরিপূরক কর্মকান্ড ও কর্মসূচী নির্ধারণ না করা, ভিন্নমতকে কোণঠাসা করা, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা না নিয়ে সর্বশেষ কথিত শৃংখলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি, বহিষ্কারের পথেই কয়েকবছর ধরে নেতৃত্বের একাংশ দল পরিচালনা করেছেন। এর প্রেক্ষিতে সারাদেশের ১৬ জন নেতা অতীতের ভুলের পর্যালোচনা করে তাদের মতামত তুলে ধরেছিলেন। অথচ দলের পক্ষ থেকে তাদের বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে সবধরণের মতাদর্শিক সংগ্রামের পথ রুদ্ধ করা হল।
ফলে এই অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে এদেশের শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে সিলেটসহ সারাদেশের নেতা-কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের মার্কসবাদ-লেলিনবাদ ও শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ সঠিক বিপ্লবী দল গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি