রোহিঙ্গারা এখনও পাচ্ছেন বাংলাদেশি পাসপোর্ট

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসে। এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করাসহ কিছু নিয়মনীতিতে আনা হয় পরিবর্তন।
এরপরেও বন্ধ নেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি নাগরিক বানানোর কার্যক্রম। অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় পাসপোর্ট বানিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকদের। এ ক্ষেত্রে প্রধান টার্গেট করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নারীদের।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর রামপুরার আফতাবনগর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এমনই এক মানবপাচারকারী চক্রের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)।
ওই বাসা থেকে ১৩ জন রোহিঙ্গা নারী উদ্ধারসহ আটক করা হয়েছে চক্রের দুই সদস্যকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, ভুয়া জন্মনিবন্ধনের কপি, জন্মনিবন্ধন ফরম এবং পাসপোর্ট ফরম উদ্ধার করা হয়েছে। আটক মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্য হলেন- কবির আহমেদ (৪০) ও এমরান (২৮)।
র‌্যাব-৩ এর অপারেশন অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি এম ফাইজুল ইসলাম জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আফতাবনগরের ২ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৩ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট ও পাসপোর্ট আবেদনের বিভিন্ন উপকরণসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, কবির সাত মাস আগে ওই বাসাটি ভাড়া নেন। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নারী সংগ্রহ করে বিভিন্ন পন্থায় ঢাকায় নিয়ে আসেন। চক্রের দুই সদস্য হাবিব এবং ইমরান পাসপোর্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা নারীদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন। এরপর রোহিঙ্গা নারীদের বাংলাদেশি পরিচয়ে মালয়েশিয়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চ মূল্যে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হতো।
চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া উদ্ধার করা রোহিঙ্গা নারীদের কক্সবাজারের ক্যাম্পে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান জানান, আটক কবির একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করেন বলে জানা গেছে। অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পাচারকারী এ চক্রটি রোহিঙ্গা নারীদের টার্গেট করেছে। আর তাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাইয়ে দিতে পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজস রয়েছে।
উদ্ধার ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে পাচারের উদ্দেশ্যে ওই বাসায় এনে রাখা হয়েছিলো। তাদের সড়ক পথে ভারত হয়ে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্য আনা ছিলো বলেও জানান তিনি।